নিজস্ব প্রতিবেদক, বর্ধমান: পঞ্চায়েত নির্বাচনের মুখে বড়সড় ধাক্কা খেল পূর্ব বর্ধমান জেলার সিপিএম তথা বামপন্থীরা। ২০১০ সালে তৃণমূল কংগ্রেসের দুই সমর্থকের খুনের ঘটনায় বুধবার বর্ধমান আদালত ১৮জন সিপিএম সমর্থক ও নেতাকে যাবজ্জীবন সাজার রায় শোনাল। বুধবার বর্ধমান আদালতের প্রথম অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা বিচারক শেখ মহম্মদ রেজা এই রায় প্রদান করেন।
আদালত সূত্রে জানা গেছে, ২০১০ সালের ১৪ সেপ্টেম্বর সিপিএম সমর্থকেরা জামালপুর থানার রেশালতপুর গ্রামের দিঘীরপাড় এবং উজিরপুরের রুইদাস পাড়াতে হামলা চালায় বলে অভিযোগ উঠেছিল। সেদিন গ্রামের তাঁতিপাড়ায় তুলে নিয়ে গিয়ে খুন করা হয় তৃণমূল নেতা পাঁচু দাসকে। একইভাবে অমরপুর গ্রামের ঈশা মল্লিককেও তুলে নিয়ে গিয়ে খুন করা হয়। এই ঘটনায় পাঁচু দাসের ভাইপো প্রবীর দাস জামালপুর থানায় সিপিএম নেতা ও কর্মীদের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করেন। ২০১১ সালের ১৬ জানুয়ারী পুলিশ এই ঘটনার তদন্ত সেরে চার্জশিট পেশ করে। পুলিশী ১৮জন সিপিএম নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে সেই চার্জশিট পেশ করে।
মঙ্গলবার বর্ধমান আদালতের প্রথম অতিরিক্ত জেলা দায়রা বিচারক সেখ মহম্মদ রেজা এই ১৮জন সিপিএমের নেতা ও কর্মীকে মারাত্মক অস্ত্র নিয়ে বেআইনি জমায়েত, খুন এবং পারস্পরিক পরিকল্পনায় লিপ্ত থাকার অভিযোগে তাদের দোষী সাব্যস্ত করেন। এদিন রায় ঘোষণার পর তৃণমূল কংগ্রেসের জেলা সাধারণ সম্পাদক তথা জামালপুরের প্রাক্তন তৃণমূল বিধায়ক উজ্জ্বল প্রামাণিক জানিয়েছেন, এই ঘটনার পর সিপিএমের মুখে সন্ত্রাসের অভিযোগ আর মানায় না। তিনি জানিয়েছে্ন, এই রায়ের ফলে আদালতের প্রতি মানুষের আস্থা আরও বাড়বে।
অন্যদিকে, সরকারী আইনজীবী শিবরাম ঘোষাল জানিয়েছেন, জামালপুরের এই ঘটনা ছোট আঙারিয়াকে মনে করিয়ে দিয়েছে। সিপিএম নেতা-কর্মীরা দুই তৃণমূল কর্মীকে খুন করার পর তাদের দেহ লোপাট করা এবং মুণ্ডেশ্বরী নদীতে ভাসিয়ে দেবার পরিকল্পনাও করেছিল। পুলিশ সিপিএম সমর্থকদের হাত থেকে মৃতদেহ উদ্ধার করে। এদিকে, মঙ্গলবার এই রায় ঘোষণার পর অভিযুক্তরা রীতিমত কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন। অভিযুক্তদের পক্ষে আইনজীবী স্বপন বন্দোপাধ্যায় জানিয়েছেন, আদালত কি রায় দেখার পরই তিনি মন্তব্য করবেন। প্রয়োজনে উচ্চ আদালতের দ্বারস্থ হবেন তারা।