ডেস্ক: দীর্ঘ ৫৬ ঘণ্টারও বেশি সময় শত্রু দেশে কাটিয়ে শুক্রবার দেশে ফিরেছেন ভারতীয় বায়ুসেনার উইং কম্যান্ডার অভিনন্দন বর্তমান। জাতীয় বীরের সম্মান দিয়ে তাঁকে বরণ করে নিয়েছে গোটা দেশ। তবে শত্রুর ডেরা থেকে ঘরে ফিরলেও এখনই স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলা সম্ভব হবে না এই বীর সেনার।
রাবণের কাছে বন্দি থাকার পর রামের স্বরাজ্যে ফিরে যেমন সীতাকে দিতে হয়েছিল অগ্নিপরীক্ষা, তেমনই দেশপ্রেমের পরীক্ষার সামনে পড়তে হবে অভিনন্দনকেও। ফলে, অভিনন্দনের বর্তমান সুরক্ষিত হলেও, তাঁর ভবিষ্যৎ কি হবে, তা নিয়ে যথেষ্ট সংশয় আছে।
সাধারণত কোনও সেনাকর্মী কর্তব্যরত অবস্থায় শত্রুদেশের হাতে ধরা পড়লে জেনেভা চুক্তি অনুযায়ী তাকে প্রত্যার্পন করতে হয়। সেই হিসাবে পাকিস্তানও মুক্তি দিয়েছে বর্তমানকে। কিন্তু যেহেতু দেশটির নাম পাকিস্তান, তাই কখনই স্বস্তিতে থাকতে পারে না ভারতীয় প্রশাসন। ফলে আপাতত জেরার মুখে পড়তেই হবে তাকে। যদিও বায়ুসেনা এখনও কিছু ঘোষণা করে নি, তবে শত্রুদেশ থেকে ফেরা যে কোনও সেনা কর্মীকে নির্দিষ্ট কিছু জেরার মধ্য দিয়ে যেতে হয়। যেমন-
- এখনই বাড়ি ফিরতে পারবেন না অভিনন্দন। তাকে প্রথমে জেরা করবেন বায়ুসেনার গোয়েন্দারা।
- তাঁর মেডিক্যাল টেস্টও করা হবে।
- অনেকসময় বন্দিদের শরীরে শত্রুদেশ মাইক্রোচিপ ঢুকিয়ে দেয়। অভিনন্দনের ক্ষেত্রেও সেইসব হয়েছে নাকি তা পরীক্ষা করে দেখা হবে।
- তাঁর মানসিক অবস্থা কীরকম তা পর্যবেক্ষণের জন্য একজন মনোবিদের কাছেও নিয়ে যাওয়া হবে তাঁকে।
- বন্দি থাকাকালীন তাঁর উপর কোনও অত্যাচার করা হয়েছে কিনা তাও জানা হবে।
- পাক বিমানকে তাড়া করতে গিয়ে কী করে তাঁর বিমান দুর্ঘটনায় পড়ল, পাক সেনা কী ধরনের মিসাইল ব্যবহার করেছিল, তাও জানার চেষ্টা করবে ভারত।
- পাক সেনাদের হাতে ধরা পড়ার পর থেকে মুক্তির আগে পর্যন্ত কী কী হয়েছে, তাঁর পুঙ্খানুপুঙ্খ বিবরণ জানতে চাওয়া হবে।
- তিনি কোন কোন নথি নষ্ট করেছেন, কোনও নথি পাক সেনার হাতে তুলে দিয়েছেন কিনা তাও জেরা করে জানার চেষ্টা করা হবে।
- বন্দি থাকাকালীন অভিনন্দনকে কোনও রকম আপসের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল কিনা তাও জানতে চাওয়া হবে।
এছাড়াও আরও কিছু সামরিক জেরার সম্মুখিন হতে হবে অভিনন্দন বর্তমানকে। এই গোটা প্রক্রিয়া ‘ডিব্রিফিং’ নামেই পরিচিত। ফলে বীরত্বের সঙ্গে শত্রুদেশকে ঠেকালেও এখন তাঁকে ‘কোয়ারেনটাইন’ পিরিয়ডেই থাকতে হবে উইং কম্যান্ডার অভিনন্দনকে।