ডেস্ক: রোজ নিয়ম করে ১ ঘণ্টার পূজা। হাতে একটি দামি নীলার সঙ্গে আরও দুটি আংটি। বাড়ির সামনে যাতে কারও নজর না লাগে তাই তান্ত্রিককে দিয়ে তুকতাক করানোর পর বাড়ির সামনে লাগানো হয়েছে কালো ভয়ংকর এক দৈত্যের মূর্তি। রাজ্য সরকারের রূঢ় দৃষ্টি কাটাতে অলৌকিক শক্তির আশ্রয়ে নিজেকে আপাদমস্তক মুড়ে ফেলেছেন একদা নিজেকে পাহাড়ের বাপ বলে দাবি করা বিমল গুরুং।
রাজ্যসরকারের বিরুদ্ধে হিংসার বিদ্রোহ করতে গিয়ে ক্ষমতায় ছেদ পড়েছে আগেই। বর্তমানে পাহাড়বাসীও বিমল বিমুখ হয়ে হাত ধরেছেন বিনয়ের। এহেন অবস্থায় পাহাড়ে রীতিমতো কোণঠাসা বিমলগুরুংয়ের অন্যতম ভরসার জায়গা হয়ে উঠেছে তন্ত্রসাধনা। কিন্ত কেন হঠাৎ বিমল ছুটলেন কালা যাদুতে? জানা গেছে, পাহাড়ে অশান্তির পর যখন ধীরে ধীরে ক্ষমতার রাশ বিমলের হাত থেকে চলে যাওয়া এবং তাঁর নামে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি হওয়ার পর নেপালে এক তান্ত্রিকের স্মরণাপন্ন হন বিমল। কারন সেই সময় পাতেলাবাসে বিমলের বাড়ির নিকটবর্তী দলীয় কার্যালয় থেকে উদ্ধার করা হয় প্রচুর অস্ত্রসস্ত্র। পুলিশের তরফ থেকে সিল করে দেওয়া হয় বিমলের বাড়ি। পলাতক বিমল তখন নতুন করে পাহাড়ে ফিরতে ব্যাকুল হয়ে উঠেছিলেন। তাই ওই তান্ত্রিকের স্মরণাপন্ন হন তিনি। এরপর বর্তমানে আদালতের নির্দেশে প্রকাশ্যে এসেছেন বিমল। ফলস্বরুপ তন্ত্র সাধনায় আরও বেড়েছে বিমলের আস্থা।
বর্তমানে নতুন সমস্যায় পড়েছেন বিমল। প্রশাসন সূত্রের খবর, আর্থিক অনিয়মের ভুরি ভুরি অভিযোগ রয়েছে বিমল গুরুংয়ের বিরুদ্ধে। পাহাড়ে হিংসা ও সরকারি সম্পত্তি নষ্ট করার করার জন্য পুলিশের খাতায় নাম উঠেছে বিমল গুরুং ও তাঁর স্ত্রীর। তাঁর সম্পত্তি ক্রোক করার উদ্যোগও নেওয়া হয়েছে। সম্প্রতি, রাজ্য সরকারের সঙ্গে সন্ধির বার্তা পাঠিয়েও লাভ কিছু হয়নি। তাই বেলাগাম পরিস্থিতি আয়ত্বে আনতে ও নিজের সম্পত্তি বাঁচাতে ফের সেই নেপালের তান্ত্রিকের স্মরণাপন্ন হয়েছেন তিনি। ওই তান্ত্রিককে বাড়িতে এনে বিজন বাড়িতে বিশাল যজ্ঞও করেন তিনি। বেশ কয়েকটি ছাগবলিও দেওয়া হয় সেখানে। বাড়ির সামনে টাঙিয়ে রাখা হয় একটি ছাগলের সিঁদুর মাখান মাথা। কালো পোশাক পরিহিত মানুষের মূর্তি, তিনটি হাড়। তাতেই নিত্যদিন চলছে পুজো পাঠ। তবে তন্ত্র মন্ত্রের যাদুবলে মামলা জট থেকে একদা ‘পাহাড়ের বাপ’ মুক্তি পান কিনা সেটাই এখন দেখার।