মহানগর ওয়েবডেস্ক: গত ১৫ মার্চ লন্ডন থেকে ভারতে ফিরেছিলেন গায়িকা কনিকা কাপুর। বিমানবন্দর থেকে ‘সেল্ফ কোয়ারেন্টিন’-এ না গিয়ে নিজের লখনউ-এর আবাসনেই চলে যান তিনি। এমনকি জানা গিয়েছে, বিমানবন্দরে নিজের হাঁচি লোকাতে বাথরুমেও গিয়েছিলেন তিনি। সংক্রমিত হতে পারেন জেনেও নিজে পার্টি দেন এবং সেখানে উপস্থিত হয় তাবড় রাজনৈতিক নেতা, আমলারা। পার্টিতে ছিলেন বসুন্ধরা রাজে সহ তাঁর ছেলে দুষ্মন্ত সিং এবং উত্তরপ্রদেশের স্বাস্থ্যমন্ত্রীও! এবার খবর, গত ১৮ তারিখ দুষ্মন্ত গিয়েছিলেন রাষ্ট্রপতি ভবনেও।
ইতিমধ্যে ভারতের হাল তাতে অধিকাংশ মানুষই ‘সেল্ফ কোয়ারন্টিনে’ চলে যাচ্ছেন। একাধিক রাজ্যে সাটডাউন ঘোষণা হয়েছে, বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে শপিং মল, সিনেমা হল, স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়। ভারতের করোনা আক্রান্তের সংখ্যা এখন ২২৩ জন, মৃত ৫ জন। এই প্রেক্ষিতে এখন রাষ্ট্রপতি ভবনে দুষ্মন্তের যাওয়ার খবর আতঙ্ক আরও বাড়িয়ে দিয়েছে তা বলাই বাহুল্য। পাশাপাশি, এও প্রশ্ন উঠছে যে, তারকারাই যদি এইভাবে দায়িত্বজ্ঞানের মতো কাজ করেন তাহলে সাধারণ মানুষ কাদের ভরসা করতে পারবে?
বিদেশ থেকে কেউ এলে নিয়ম অনুযায়ী বিদেশ থেকে কেউ এলে তার ১৪ দিন কোয়ারেন্টাইনে থাকার কথা। কিন্তু সরকারের এই নির্দেশিকা উড়িয়ে ওই অবস্থাতেই পার্টি করেছিলেন কনিকা। কনিকার করোনা ধরা পড়তেই ঘুম ছুটেছে পার্টিতে থাকা লোকজনদের। কনিকার সঙ্গে এক পার্টিতে যোগ দিয়েছিলেন রাজস্থানের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বসুন্ধরা রাজে, তাঁর পুত্র দুষ্মন্ত সিং ও তাঁর স্ত্রী। আবার রাজ্যসভার সাংসদ দুষ্মন্ত সিংয়ের পাশে বসেছিলেন তৃণমূল সাংসদ ডেরেক ও’ব্রায়েন। কনিকা কাপুরের করোনা ধরা পড়ার পর স্বেচ্ছায় কোয়ারেন্টিনে চলে গেলেন এই ভিভিআইপিরা।
ওই পার্টিতে ছিলেন উত্তরপ্রদেশের স্বাস্থ্যমন্ত্রী জয়প্রতাপ সিংও। কনিকার কোভিড-১৯ পজিটিভ আসার খবর শুনেই তিনিও ‘সেল্ফ কোয়ারেন্টিন’-এ চলে গিয়েছেন। এই বিষয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী জানান, ওটা একটা পারিবারিক পার্টি ছিল। সেকারণেই সেখানে তিনি গিয়েছিলেন। আজ সকালেই তিনি কনিকার কথা জানতে পারেন। তারপরেই তিনি ‘সেল্ফ কোয়ারেন্টিন’-এ চলে গিয়েছেন বলে জানিয়েছেন।
অন্যদিকে, বলিউড গায়িকার বাবা রাজীব কুমারের দাবি, তাঁর মেয়ে বিদেশ থেকে লখনউ এসে অন্তত ৪০০ পরিবারের সঙ্গে দেখা করেছেন এবং তিনটি পার্টিতে যোগ দেন! মেয়ের খবরে তাঁরাও নিজেদের পরীক্ষা করিয়েছেন এবং ‘সেল্ফ কোয়ারেন্টিন’-এ চলে গিয়েছেন। তবে বাবার বক্তব্য একেবারেই মানছেন না কনিকা। গায়িকার দাবি, তিনি মোটেই তিনটি পার্টিতে যাননি। অল্প সংখ্যক লোকের সঙ্গেই ছিলেন। যাতে অন্য কারও সংক্রমণ না হয় তার জন্য গ্লাভসও পড়েছিলেন।