মহানগর ওয়েবডেস্ক: পুরভোটের আগে একদিকে যখন বিজেপি শোভন চট্টোপাধ্যায়কে ‘সম্ভাব্য’ মেয়র প্রার্থী করতে উঠেপড়ে লেগেছে, তখনই বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায় আচমকা নবান্নে গিয়ে জল্পনা বৃদ্ধি করেছেন রাজনৈতিক মহলের। ওয়াকিবহাল মহলের মতে, পুনরায় শোভনকে ঘাসফুলে ফিরিয়ে আনতেই একটা শেষ চেষ্টা করছেন বৈশাখী। এমতবস্থায় কাগজে কলমে ঘোষিত বিজেপি হয়েও তৃণমূল সুপ্রিমোর সঙ্গে সাক্ষাৎকে বিজেপি কী চোখে দেখছে তা জানতে উদগ্রীব ছিলেন সকলেই। বিজেপি রাজ্য সভাপতি জানিয়ে দিলেন, তারা এসব নিয়ে ভাবিত নন।
এদিন সকালে হাওড়ার ২৬ নম্বর ওয়ার্ডের দয়াল ব্যানার্জি লেনের আটের পল্লীতে দিলীপ ঘোষকে নিয়ে ‘চায়ে পে চর্চা’-র আয়োজন করেছিল স্থানীয় বিজেপি নেতৃত্ব। সেখানেই বিজেপি রাজ্য সভাপতি বলেন, ‘ওদের সঙ্গে বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায় পুরনো সম্পর্ক রয়েছে, তাই তিনি যাচ্ছেন। এতে বিজেপির অস্বস্তিতে পড়ার কোনও কারণ নেই।’ দিলীপের আরও দাবি, ‘বিজেপির মুখ বিজেপিতেই আছে। আর কেউ নয়। যে কাজ করবে পার্টিতে সেই মুখ হয়ে যাবে।’
তবে এদিন বিজেপির রাজ্য সভাপতি জনসংযোগ করতে এসে দেখেন পাড়ার মোড়ে কোনও চায়ের দোকান খোলা নেই। শুধু তাই নয় বন্ধ ছিল বাজারও। এই নিয়ে বিজেপির তরফ থেকে শাসকদলের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দেওয়া হয়েছে। দিলীপ ঘোষ বলেন, ‘আমাদের ভয় পেয়ে তৃণমূল আগে থেকেই সমস্ত চায়ের দোকান, বাজার বন্ধ করে দিয়েছে। পাড়ার মোড়ে মোড়ে বিজেপির ঝান্ডা খুলে তৃণমূলের ঝান্ডা লাগিয়ে দেওয়া হয়েছে।’
এই নিয়েই শুক্রবার সকালে রাজনৈতিক উত্তেজনা চরমে ওঠে। এদিন বিজেপি মধ্য হাওড়া মণ্ডল-২ এর উদ্যোগে শুক্রবার সকালে ‘চায়ে পে চর্চা’-র আয়োজন করা হয়। উপস্থিত ছিলেন ভারতীয় জনতা পার্টির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ, জেলা সভাপতি সুরজিৎ সাহা, মণ্ডল সভাপতি শিবশঙ্কর সাধুখাঁ সহ অন্যান্য নেতৃত্ব। সকাল সাড়ে ৬টা নাগাদ বিজেপি রাজ্য সভাপতি প্রথমেই এসে পৌঁছান নরসিংহ দত্ত রোডের বিজয়ানন্দ পার্কে (ধাপার মাঠ)। সেখানে তিনি বেশ কিছুক্ষণ প্রাতঃভ্রমণ করেন। এলাকায় সময়ও কাটান। প্রাতঃভ্রমণকারীদের সঙ্গে দেখা করেন। কথাবার্তাও চলে। পার্কের বিষয়ে খোঁজখবর নেন।
দিলীপ ঘোষ বলেন, ‘তৃণমূল আমাদের যে কত ভয় পায় তার প্রমাণ আজকের ঘটনা। এখানে ‘চায়ে পে চর্চা’ অনুষ্ঠান হবে জেনে আগে থেকেই চায়ের দোকান বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। মানুষকে এরা কষ্ট দিচ্ছে। আমি এসেছি মানুষের সঙ্গে দেখা করতে এবং তাদের সঙ্গে চা খেতে। কিন্তু তা বলে এলাকায় কোনও চায়ের দোকান খুলবে না ? এটা কি ধরনের রাজনীতি ? এত ভয় কেন ? যারা মানুষকে ভয় করে তাদের রাজনীতি করাই উচিত নয়। আমাদের চেয়ে ওদের ঝান্ডা বেশি।’ এরপরেই বলেন, ‘ভালো লাগল ওরা আমায় স্বাগত জানানোর জন্য ঝান্ডা লাগিয়েছে। অন্তত বছরে একবার বেরিয়ে ঝান্ডা লাগাচ্ছে ওরা। কিন্তু দিলীপ ঘোষ আসছে বলে চায়ের দোকান খুলবে না, বাজার খুলবে না এ রাজ্যে এ ধরনের রাজনীতি হওয়া উচিত নয়। ভয় দেখানো আর ভয় পাওয়া দুটোই বন্ধ হওয়া উচিত। গণতন্ত্রে কারো কোনও জমিদারি হয় না। সাধারণ মানুষের অধিকার সুরক্ষিত করতে আমি এখানে এসেছি।’