মহানগর ওয়েবডেস্ক: কঙ্গনা রানাওতের বাড়ি ভাঙার মধ্যে বৃহন্মুম্বই মিউনিসিপাল কর্পোরেশন (বিএমসি)–র কিছু ‘গোলমেলে’ আচরণ ধরা পড়ল বোম্বে হাইকোর্টের পর্যবেক্ষণে। বেআইনি নির্মাণের অভিযোগে পালি হিলে ৯ সেপ্টেম্বর অভিনেত্রীর বাড়ির কিছুটা ভেঙে দেয় পুরসভা। পুরসভার এই পদক্ষেপের বিরুদ্ধে কঙ্গনা রানাওত বোম্বে হাইকোর্টে পিটিশন দাখিল করে। সোমবার সেই পিটিশনের ভিত্তিতে শুনানি শুরু হয়।
দুই বিচারপতির বেঞ্চ জানান, রানাওতের ক্ষেত্রে পুরসভা তাদের নিজেদের নীতিই অনুসরণ করেনি। অন্যান্য ক্ষেত্রে বেআইনি নির্মাণের নোটিশ জারি করে কাজ বন্ধের নির্দেশ দেওয়ার সময় নোটিশের সঙ্গে বেআইনি অংশের ছবি দিয়ে দেওয়া হয়। এক্ষেত্রে নোটিশের সঙ্গে কোনও ছবি দেওয়া হয়নি। দ্বিতীয়ত, এই নোটিশ জারি করার পর ভাঙার কাজ শুরু করার আগে কিছুদিন অপেক্ষা করার রীতি রয়েছে পুরসভার। রানাওতের বাড়ি ভাঙার ক্ষেত্রে সেই রেওয়াজও মানা হয়নি।
আদালতের পক্ষ থেকে সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ড অফিসার ভাগ্যবন্ত লেট’কে প্রশ্ন করে জানা যায়, অভিনেত্রীর বাড়ির কাছেই অন্য একটি বাড়ির ক্ষেত্রে নোটিশ জারি করার পর পুরসভা বেশ কিছুদিন অপেক্ষা করেছে ভাঙার কাজ শুরু করতে। বাড়ি ভাঙার সময় পুরসভা ঘটনাস্থলে পুলিশ বাহিনীও নিয়ে যায়নি। এই দুটি নীতির কোনওটাই মানা হয়নি কঙ্গনা রানাওতের বাড়ি ভাঙার ক্ষেত্রে।
কেন অভিনেত্রীর বাড়ি ভাঙার সময় পুরসভা বিশাল পুলিশ বাহিনী নিয়ে গিয়েছিল, বিচারপতিদের এই প্রশ্নের উত্তরে ভাগ্যবন্ত লেট জানান, কঙ্গনা রানাওতের বিষয়টি অত্যন্ত গুরুতর ছিল। ‘গুরুতর বিষয়’ বলতে ঠিক কী বোঝানো হচ্ছে, একজন সেলেব্রেটি জড়িত থাকার জন্যই বিষয়টি গুরুতর কিনা জানতে চাওয়া হয় বিচারপতিদের পক্ষ থেকে।
কঙ্গনা রানাওতের আইনজীবী ড. বীরেন্দ্র শরাফ তার সওয়ালে বলেন, ৭ সেপ্টেম্বর বিএমসি’র একটি দল গিয়ে কাজ বন্ধ করার নোটিশ দেয়। এই বিষয়ে রানাওতের উত্তর প্রত্যাখ্যান করে বাড়ি ভাঙতে শুরু করে। ১০ সেপ্টেম্বর শিবসেনা মুখপত্র ‘সামনা’য় বড় করে এমনভাবে সংবাদটি ছাপা হয় যে মনে হয় এটি একটি অত্যন্ত খুশির খবর। তার সওয়ালে অভিনেত্রীর আইনজীবী একটি নিউজ ক্লিপ চালিয়ে আদালতকে শোনান, যেখানে শিবসেনা নেতা সঞ্জয় রাউতকে বলতে শোনা যায় ‘’রানাওতকে একটা শিক্ষা দেওযা দরকার।‘’
সঞ্জয় রাউতের আইনজীবী আদালতে বলেন সাক্ষাৎকারে শিবসেনা নেতা একবারও কঙ্গনা রানাওতের নাম উচ্চারণ করেননি। বিএমসি’র আইনজীবী কঙ্না রানাওতের আবেদনকে রিট পিটিশন হিসেবে গ্রাহ্য না করে ‘মামলা’ হিসেবে গ্রহণ করতে বলেন যেখানে অভিনেত্রীকে কাঠগড়ায় দাঁড়িয়ে সাক্ষ্য দিতে হবে। অন্যথায় এই পিটিশন খারিজ করার আবেদন জানান। বৃহন্মুম্বই মিউনিসিপাল কর্পোরেশন তাদের বিরুদ্ধে তোলা সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করেছে। তার আবেদনে কঙ্গনা রানাওত বিএমসি’র কাছে ক্ষতিপূরণ বাবদ ২ কোটি টাকা দাবি করেছেন।