মহানগর ওয়েবডেস্ক: সেনার নামে ভোট চাইতে পিছপা হন না প্রধানমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীরা। কিন্তু সিয়াচেনে হাড় কাঁপানো ঠান্ডায় দেশকে রক্ষা করা সেনাবাহিনীর জওয়ানরাই পর্যাপ্ত খাবার পাচ্ছেন না। বরফের মধ্যে চোখকে রক্ষা করার বিশেষ চশমা ‘স্নো গ্লাস’ নেই তাদের কাছে। এমনকী মাল্টিপারপাস জুতো, যা বরফে অত্যন্ত প্রয়োজনীয় জিনিস হিসেবে ধরা হয়, সেটাও পাচ্ছেন না তারা। ফলে ভয়াবহ ঠান্ডায় গুরুতর অসুখে আক্রান্ত হচ্ছেন জওয়ানরা। এই তথ্যগুলি কোনও বিরোধী দলের দাবি নয়। বরং জানানো হয়েছে সংসদে ক্যাগের রিপোর্টে।
ক্যাগের এই রিপোর্টে বলা হয়েছে, সিয়াচেনের মতো অধিক উচ্চতায় স্বাভাবিকের থেকে অনেক বেশি প্রোটিনযুক্ত খাবার প্রয়োজন পড়ে আইটিবিপি জওয়ানদের। কিন্তু বিজ্ঞানসম্মত ভাবে যতটা খাবার তাদের দরকার লাগে, ততটা তারা পাচ্ছেন না। শুধু তাই নয়, জওয়ানদের পর্যাপ্ত পরিমাণ ক্যালোরি নিয়েই সমঝোতা করতে হচ্ছে। ক্যাগের এই রিপোর্ট সংসদের উচ্চকক্ষ রাজ্যসভায় পেশ করা হয়। কিন্তু তাৎপর্যপূর্ণভাবে লোকসভায় পেশ করা হয়নি। তবে এই রিপোর্ট যে ভারতীয় সেনাদের দুরাবস্থার কথাই নতুন করে তুলে ধরছে তা চোখ বন্ধ করে বলে দেওয়া যায়।
ক্যাগের রিপোর্ট অনুসারে, প্রয়োজনের থেকে সিয়াচেনের জওয়ানদের কাছে ৬২% থেকে ৯৮% শতাংশ কম সাপ্লাই রয়েছে ‘স্নো গ্লাস’-এর। দুর্গম আবহাওয়ায় এই চশমাই তাদের চোখ এবং মুখ বাঁচিয়ে রাখে। এর থেকেও বাজে বিষয়, জওয়ানদের কার্যত বাধ্য করা হচ্ছে পুরনো মাল্টিপারপাস জুতো ব্যবহার করার জন্য। এতে যারপরনাই হতাশ জওয়ানরা।
এ ছাড়াও মাইনাস ২০ থেকে ৩০ ডিগ্রির মতো তাপমাত্রায় যুঝতে যেই ধরনের সরঞ্জাম আবশ্যক, তা নেই সেনাবাহিনীর হাতে। ফেস মাস্ক, জ্যাকেট ও স্লিপিং ব্যাগ এই তিনটি জিনিস আবশ্যক সিয়াচেনের ঠান্ডায়। সেখানেও সন্তুষ্ট করার মতো জিনিস নেই। মান্ধাতার আমলের জ্যাকেট বা স্লিপিং ব্যাগে রাত কাটাতে হচ্ছে তাদের। কোনওটা ফেটে গিয়েছে, কোনওটার অবস্থা আরও খারাপ।
চাকরি, অর্থনীতি, বা বেকারত্ব নিয়ে বর্তমান কেন্দ্রীয় সরকার কোনো কালেই ভাবিত নয়। এবার জওয়ানদেরও যদি এই অবস্থায় দিন কাটাতে হয় তবে ‘আছে দিন’ এল কাদের? উত্তর নেই কারোর কাছে।