ডেস্ক: অগাস্তা ওয়েস্টল্যান্ড হেলিকপ্টার চুক্তির ‘দালাল’ ক্রিশ্চিয়ান মাইকেলকে দেশে এনে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করেছে সিবিআই। ২০১৯ লোকসভা নির্বাচনের আগে কেন্দ্রের এই পদক্ষেপ যে কংগ্রেসের উপর চাপ বাড়াতে চলেছে তা এককথায় নিশ্চিত। তবে তদন্তের সময় বেশ কিছু তথ্য উঠে এসেছে, যার ফলে বাইরে থেকে প্রভাব খাটানোর সম্ভাবনাও একেবারে উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না।
গতকালই মাইকেলকে পাঁচ দিনের সিবিআই হেফাজত দিয়েছে আদালত। কিন্তু প্রথম রাতটা মোটেও ভালো কাটেনি মাইকেলের। সূত্রের খবর, সারারাত মাত্র দু’ঘণ্টা ঘুমাতে দেওয়া হয় তাঁকে। বেশ কয়েকবার শরীর অসুস্থও হয়ে পড়ে মাইকেলের। এরপর ডাক্তারও ডেকে আনা হয়। চিকিৎসার পর চুক্তিতে টাকার লেনদেন ও চুক্তি সংক্রান্ত কাজগপত্রের বিষয়েও জানতে চান সিবিআই আধিকারিকেরা। কিন্তু গোটা চুক্তির ব্যাঙ্ক স্টেটমেন্ট সংক্রান্ত কোনও তথ্যও হাতে আসেনি সিবিআই-এর। এরই মধ্যে তৎকালীন ইউপিএ সরকারের কোনও মন্ত্রী বা প্রতিরক্ষা আধিকারিককে ঘুষ দেওয়ার কথা অস্বীকার করে মাইকেল। তবে এই চুক্তি বাবদ টাকা নেওয়ার কথা স্বীকার করে সে। যা ‘কনসাল্টেন্সি ফি’ ছিল বলে দাবি করে ৫৭ বছরের এই ‘দালাল’। এরই মধ্যে গুইডো হ্যাশকে নামের ইউরোপের আরেক ব্যক্তির নাম উঠে এসেছে যার চিঠিতে প্রকাশ পেয়েছে আরেক চাঞ্চল্যকর তথ্য। সেখানে এই কপ্টার চুক্তির পেছনে সনিয়া গান্ধীকেই মূল ‘চালিকা শক্তি’ হিসেবে বর্ণনা করা হয়েছে।
সম্প্রতি আবু ধাবিতে সুষমা স্বরাজের সঙ্গে সংযুক্ত আরব আমিরশাহির বিদেশমন্ত্রী আবদুল্লা বিন জাইদের আলোচনার পরই মাইকেলের ভারত প্রত্যার্পণের বিষয়টি চূড়ান্ত হয়। গত জুলাই মাসে মাইকেলের আইনজীবী এক বিবৃতিতে জানান যে ভারতের কোনও কোনও মহল থেকে কংগ্রেসের সনিয়া গান্ধির নাম জড়িয়ে দেওয়ার ব্যাপারে তার উপর চাপ আসছে। অন্যদিকে মোদী আবার প্রচারে গিয়ে জনসভায় দাঁড়িয়ে দাবি করছেন, মাইকেলকে তদন্ত চালিয়ে এমন তথ্য উঠে আসবে যা গান্ধী পরিবারের বিপদ ডেকে আনবে।
এখানেই প্রশ্ন উঠছে, মাইকেল সিবিআই তদন্তে কী কবুল করবেন, সেই বিষয়টি আগে থেকে কীভাবে বুঝে যাচ্ছেন মোদী। ফলে মাইকেলের আইনজীবীর অভিযোগের সঙ্গে মোদীর দাবিও অদ্ভুত ভাবে মিলে যাচ্ছে। তবে কি ২০১৯ লোকসভা নির্বানের আগে ‘কংগ্রেস মুক্ত ভারত’ গড়তে মাইকেলই হয়ে উঠতে পারে মোদীর তুরুপের তাস? কারণ রাফালে চুক্তি নিয়ে যেভাবে রাহুল গান্ধী চাপ সৃষ্টি করছেন, তার পালটা অগাস্তা ওয়েস্টল্যান্ড হেলিকপ্টার চুক্তিকে কাঠগড়ায় না তুললে বিপদ হতে পারত মোদীর। এই নিয়ে তীব্র জলঘোলা শুরু হয়েছে রাজনৈতিক মহলে। প্রসঙ্গত, ২০০৭ সালে তৎকালীন কেন্দ্রীয় সরকারের সঙ্গে ভিভিআইপি-দের জন্য ১২টি বিলাসবহুল হেলিকপ্টার কেনার চুক্তি হয়েছিল। সেই চুক্তিতেই ২২৫ কোটি টাকা ঘুষ লেনদেনের অভিযোগ উঠেছিল এবং যার মূলচক্রী হিসাবে নাম উঠেছিল এই ক্রিশ্চিয়ান মাইকেলের।