নিজস্ব প্রতিনিধি: বিগত বিধানসভা ও লোকসভা নির্বাচনে কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করা হলেও তাদের কার্যত বসিয়ে রেখে ভোট ‘লুট’ করা হয়েছে বলে অভিযোগ বিরোধীদের। এবার এধরনের অভিযোগ রুখতে আগে থেকেই তৎপর হল নির্বাচন কমিশন। কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানদের ঘোরাফেরা যাতে স্থানীয় পুলিশের ওপর না থাকে, আগের বারের মতো তাদের যাতে থানায় বসিয়ে রাখার অভিযোগ না ওঠে তা দেখতে কঠোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে কমিশনের তরফ থেকে। কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন ও তাদের সঠিক ভাবে কাজে লাগানোর বিষয়টি প্রশাসনের সর্বোচ্চ স্তর থেকে যাতে দেখাশোনা করা হয়, তা নিশ্চিত করতে বলা হয়েছে। নির্বাচন কমিশন নির্দেশ দিয়েছে, প্রত্যেক জেলায় কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানদের মোতায়েন করার সময় সংশ্লিষ্ট জেলার জেলাশাসক ও পুলিশ সুপারদের উপস্থিত থাকতে হবে। জেলাশাসকরা পদাধিকার বলে জেলার নির্বাচনী আধিকারিক হিসাবে কাজ করেন।
ভোট ঘোষণার পর তাঁরা কমিশনের নির্দেশেই প্রশাসনিক সমস্ত কাজকর্ম পরিচালনা করেন। কাজেই তাদের হাতেই কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েনের পুরো বিষয়টি রাখতে চাইছে কমিশন। যাতে এই নিয়ে কোনও অভিযোগ উঠলে সরাসরি তারা জেলাশাসকের কাছ থেকেই জবাবদিহি তলব করতে পারেন।
এবার বিধানসভা ভোটে রাজ্যে এক হাজার কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েনের পরিকল্পনা করেছে নির্বাচন কমিশন। এর মধ্যে ২৭ মার্চ প্রথম দফার ভোটের আগেই রাজ্যে সাড়ে ৬০০ কোম্পানি আধাসেনা মোতায়েন করা হবে। কমিশন সূত্রে খবর, ২৫ মার্চের মধ্যেই রাজ্যে দফায় দফায় সাড়ে ৬০০ কোম্পানি আধাসেনা মোতায়েনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে চলতি সপ্তাহে আরোও ১৭০ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী আসছে রাজ্যে। ভোট ঘোষণার আগে থেকেই বাহিনী আসা শুরু হয়েছে।
এখনও পর্যন্ত ১১৮ কোম্পানি ইতিমধ্যেই রাজ্যে এসেছে। রাজ্যের বিরোধী দলগুলি নির্বাচন কমিশনকে আবেদন করেছিল যে, বিধানসভা নির্বাচন কোনওভাবেই যাতে রাজ্য পুলিশ দিয়ে না করানো হয়। কারণ রাজ্য পুলিশের ওপর বিরোধী দলগুলির কোনওরকম ভরসা নেই। তারা বারবার রাজ্য পুলিশের বিরুদ্ধে পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ আনেন। গত লোকসভা নির্বাচনে রাজ্যে এসেছিল ৭৪৯ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী। এ বছরে রাজ্যের তরফ থেকে চাওয়া হয়েছিল ৮০০ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী। নির্বাচন কমিশন সূত্রে খবর রাজ্যের বিধানসভা নির্বাচনে সুষ্ঠুভাবে ভোট পরিচালনা করার জন্য যা ব্যবস্থা নেওয়ার কমিশন নেবে। ধাপে ধাপে কেন্দ্রীয় বাহিনীর রাজ্যে আসবে এবং সেই সংখ্যাটা হাজার কোম্পানিও ছাড়িয়ে যেতে পারে।