ডেস্ক: কাল যখন তিনি পাহাড়ে পা রাখেন তখন গোটা পাহাড় ঢেকেছিল বরফে। আচমকা নেমে আসা শিলাবৃষ্টিতে হতভম্ব হয়ে পড়েছিলেন পর্যটকেরাও। কিন্তু তার কোন রেশ মঙ্গলবার সকালে না দেখতে পাওয়া গেল দার্জিলিং শহরের বুকে, না প্রথমবার পাহাড়ে আয়োজিত শিল্প সম্মেলন ‘হিল বিজনেস সামিট’ এর মঞ্চে। আর সম্মেলনের মূল কেন্দ্রবিন্দু যিনি, সেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তো এদিন সভায় বলেই দিলেন ‘কাঞ্চনজঙ্ঘা আজ হাসছে। পাহাড়ের এই হাসিমুখই তো আমরা দেখতে চাই। পাহাড় যাতে ভাল থাকে তার জন্যই তো এতকিছুর আয়োজন। পাহাড়ে শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় রাখতে হবে। তবেই তো শিল্পে বিনিয়োগ আসবে। কর্মসংস্থান হবে।’ সেই শিল্পগত বিনিয়োগ আর কর্মসংস্থানের স্বপ্ন বুনেই মঙ্গলবার দার্জিলিংয়ের ম্যাল চৌরাস্তায় শুরু হল দুদিনের হিল বিজনেস সামিট। মঞ্চে মুখ্যমন্ত্রীর পাশাপাশি সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন রাজ্যের এক ডজন মন্ত্রী, ডজন তিনেক শিল্পপতি আর জিটিএ চেয়ারম্যান বিনয় তামাং ও ভাইস চেয়ারম্যান অনিল থাপা।
মুখ্যমন্ত্রী তার ভাষণে বলেন,’ দার্জিলিঙয়ে প্রচুর সম্ভাবনা রয়েছে। সেই সম্ভাবনাকেই ঠিকঠাক ভাবে তুলে ধরতে হবে। এখানে চা-পর্যটন-পরিবহন শিল্পে উন্নতির সম্ভাবনা রয়েছে। গড়ে তোলা যেতে পারে তথ্যপ্রযুক্তি পার্ক। মিরিকে স্থানীয় শিল্পের হাব গড়া যেতে পারে। এখানকার অর্কিডের খুব সুনাম রয়েছে। অর্কিডকে ঘিরেই অর্কিড ট্যুরিজ্ম চালু করা যেতে পারে। জাপান পাহাড়ে শিল্প গড়তে চাইছে। এটা খু্ব ভাল লক্ষণ। যত দেশী-বিদেশী বিনিয়োগ আসবে পাহাড়ের অর্থনীতি ততই সমৃদ্ধি হবে। কিছু লোক তাদের নিজেদের স্বার্থ বজায় রাখতে মানুষকে ভুল বুঝিয়ে ভয় দেখিয়ে টানা ১০৫ দিন ধরে বনধ চালিয়ে গিয়েছিল। তাতে পাহাড়ে প্রায় ১০০০ কোটি টাকা ক্ষতি হয়েছে। কে সেই ক্ষতিপূরণ করবে? যারা বনধ ডেকেছিল তারা খোঁজ রাখে পাহাড়ের গ্রামের মানুষ প্রতিদিন কত কষ্ট করে খাবার জল জোগাড় করে ? পাহাড়কে ঘুরে দাঁড়াতেই হবে। রাজ্য সরকার পাহাড়ের মানুষের পাশে আছে। রাজ্য সরকারের অনেক প্রকল্প আছে। সবুজসাথী, খাদ্যসাথী, স্বাস্থ্যসাথী, সবুজশ্রী, কন্যাশ্রী, যুবশ্রী অনেক প্রকল্প আছে। আমরা সব কিছু দিয়ে জিটিএকে সাহায্য করব। পাহাড়ে শান্তি বজায় রাখতেই হবে। বাংলা মানে ব্যবসা। বাংলা এখন অনেক কিছুতেই দেশে এক নম্বরে। পাহাড়কেও উঠে আস্তে হবে। দার্জিলিংকে টুকরো হতে দেবেন না। এমন কাউকে সাহায্য করবেন না যারা দার্জিলিংকে টুকরো করতে চায়। লাভা-লোলেগাঁও-কালিম্পং-সান্দাকফু সব জায়গাকে দার্জিলিংয়ের মত গড়ে তুলতে হবে। হর্টিকালচার-ফুডপ্রসেসিং শিল্পে নজর দিতে হবে। ইচ্ছাশক্তি থাকলেই কাজ হবে। বিনয় তামাং – অনিল থাপাকে ধন্যবাদ দেব পাহাড়ের বুকে এধরনের একটি শিল্প সম্মেলন করার জন্য।’