ডেস্ক: বাংলায় একটা ভীষণণ প্রচলিত প্রবাদ আছে, ‘নাচতে না জানলে উঠোন ব্যাঁকা’! অর্থাৎ, নিজের ব্যর্থতাকে অস্বীকার করে অপরের ঘাড়ে দায় চাপানোর একটা অভ্যাস থাকে অনেকেরই৷ কর্ণাটক কংগ্রেস এবার সেই পথেই হাঁটল৷ ভরাডুবির জন্য নিজেদের আত্মসমালোচনা না করে, হারের জন্য দায়ী করল ইভিএম-কে৷ আগেই অবশ্য ইভিএমের পরিবর্তে ব্যালটে ভোটের দাবি তুলছিল কংগ্রেস নেতা মোহনপ্রকাশ। এবার সেই পথে হাঁটে ইভিএম কারচুপির তত্ত্ব খাড়া করলেন রাজ্যসভায় বিরোধী দলনেতা তথা কংগ্রেসের গুলাম নবি আজাদ। তাঁর অভিযোগ, একের পর এক নির্বাচনে কেন্দ্রের শাসক দল গণনার আগেই আসনপ্রাপ্তির সংখ্যা কার্যত মিলিয়ে দিচ্ছে৷ যা ইভিএম কারচুপি ছাড়া কখনোই সম্ভব নয়৷ প্রসঙ্গত, এর আগে গুজরাত বিধানসভা নির্বাচনেও ইভিএম-কে দায়ী করেছিল কংগ্রেস৷
মঙ্গলবার সকাল থেকেই একের পর এক পিছিয়ে পড়েছে কংগ্রেস৷ নরেন্দ্র মোদী-অমিত শাহের হাত ধরে দাক্ষিণাত্যেও এবার আছড়ে পড়ল গেরুয়া ঝড়৷ ২০১৪ সালে কেন্দ্রে শাসন ক্ষমতায় আসার পর ‘কংগ্রেস মুক্ত’ ভারত গড়ার যে শপথ নিয়েছিলেন মোদী-অমিত শাহ, দু’একটা জায়গায় বাদ দিয়ে তা কার্যত সম্পন্ন হতে চলেছে৷ মোদীর অশ্বমেধের ঘোড়াকে থামানো এখন দিবাস্বপ্ন হয়ে দাঁড়িয়েছে বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলির সামনে৷
কর্ণাটকের মতো শক্ত ঘাঁটিতেও নিজেদের বিপর্যয় কিছুতেই মেনে নিতে পারছে না কংগ্রেস৷ বিজেপির থেকে ১ শতাংশ বেশি ভোট শেয়ার পেয়েও কর্ণাটকের ব্যাটল হাতছাড়া হচ্ছে সিদ্দারামাইয়ার৷ কর্ণাটকের ফলাফল বিজেপির পক্ষে যাওয়ার পরই কংগ্রেস নেতা গুলাম নবি আজাদ কারচুপির গন্ধ পাচ্ছেন৷ মর্যাদার লড়াইয়ে হারার পর আজাদ বলছেন, ‘আমি কিছুতেই বুঝতে পারছি না, আগে থেকে কীভাবে বিজেপি নেতারা কর্ণাটকে তাদের প্রাপ্ত আসনের প্রায় সঠিক ভবিষ্যতবাণী করেছেন৷ বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি অমিত শাহ নির্বাচনের পরই জানিয়েছিলেন, ১৩০টি আসন পেতে পারে বিজেপি। এতটা নিশ্চিত হয়ে এটা কীভাবে বলা সম্ভব?’ গুলাম নবি আজাদের আরও দাবি, অনৈতিকভাবে ইভিএম কারচুপি করলেই আসন সংখ্যা আর জয়ের ব্যাপারে এতটা নিশ্চিত হওয়া সম্ভব।
শুধু গুলাম নবি আজাদ নয়, কংগ্রেস নেতা মোহনপ্রকাশ অনেক আগেই ইভিএম কারচুপির অভিযোগ করেছিলেন। তিনি বলেছিলেন, ‘প্রথম দিন থেকেই ইভিএম কারচুপির অভিযোগ করে আসছি। শুধু আমরা নয়, সমস্ত বিরোধী দলই ইভিএম নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছে। এত অভিযোগের পরেও বিজেপি কেন ব্যালটে ভোট করাল না৷ তাহলে কী ডাল ম্যায় কুছ কালা হ্যায়?’
খুব স্বাভাবিকভাবেই কংগ্রেসের এই অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছে গেরুয়া শিবির৷ বিজেপি নেতা সুব্রহ্মণ্যম স্বামী তাঁর প্রতিক্রিয়া দিতে গিয়ে কংগ্রেসকে তুলোধনা করেন৷ সেইসঙ্গে এমন আজব অভিযোগ শুনে হেসে ফেলেন তিনি৷ সুব্রহ্মণ্যম স্বামী বলেন, ‘ওরা মানুষের রায়কে বিশ্বাস করে না৷ তাই হেরে গেলেই ইভিএমকে দোষ দেয়৷’