Highlights
|
নিজস্ব প্রতিনিধি, বর্ধমান: গোটা বিশ্ব জুড়ে নোভেল করোনাভাইরাস নিয়ে চূড়ান্ত সতর্কতা জারি করেছে ‘হু’। পরিস্থিতি বিচার করে সাধারণ মানুষ এড়িয়ে চলছে ভিড় বা জমায়েত। বাতিল করা হয়েছে ভিসা। দেশ ছেড়ে যাওয়া এবং বিদেশ থেকে আসার ক্ষেত্রে জারি হয়েছে বিধিনিষেধ। আর এরই মাঝে আচমকা বর্ধমানের ভাতার থানার মাহাতা গ্রাম পঞ্চায়েতের জামবনি গ্রামে একটি অনুষ্ঠানে আসা ৩ ইতালিয়ানকে ঘিরে ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়াল। খবর পেয়ে সঙ্গে সঙ্গে ঘটনাস্থলে হাজির হন ভাতার থানার পুলিশ-সহ ভাতারের বিডিও শুভ্র চট্টোপাধ্যায় ও ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক সংঘমিত্রা ভৌমিক। এরপর ওই তিন বিদেশিকে এলাকা ছেড়ে চলে যাওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়। এদিন পুলিশই তাঁদের এসকর্ট করে ঝাড়খণ্ডের উদ্দেশে রওনা করিয়ে দেয়।
এদিন জামবনি গ্রামের একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার কর্ণধার শর্মিষ্ঠা সিংহ রায় জানিয়েছেন, ওই তিনজন ইতালিয়ান ফ্রাঙ্কো কার্সেটি, এনচোলিনা এবং ফ্রাঞ্চেস্কো এদিন সকালে এই গ্রামে আসেন। তার আগে তাঁরা আউশগ্রামের একপাড়াডাঙায় একটি প্রোজেক্টের কাজ খতিয়ে দেখেন। শর্মিষ্ঠাদেবী জানিয়েছেন, এই প্রোজেক্টের মাধ্যমে আদিবাসী মানুষদের স্বনির্ভরতার প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। এই প্রোজেক্টের জন্য অর্থ বরাদ্দ করছেন ওই তিন ইতালিয়ানই। সম্প্রতি, এই সংস্থার একটি প্রোজেক্টের উদ্বোধন হলেও করোনাভাইরাসের জেরে এই তিন ইতালিয়ান আসতে পারেননি। তাই এদিন তাঁরা সেই প্রকল্পের উদ্বোধন অনুষ্ঠান আসেন। যদিও খবর পেয়েই পুলিশ ও প্রশাসনের আধিকারিকরা গিয়ে এদিন এই কর্মসূচি বন্ধ করে দিয়ে তাঁদের দ্রুত এলাকা ছাড়ার নির্দেশ দেন।
শর্মিষ্ঠাদেবী জানিয়েছেন, দীর্ঘদিন ধরেই এই ইতালিয়ানরা ভারতবর্ষের বিভিন্ন জায়গায় সামাজিক কাজ করে চলেছেন। বর্ধমান ছাড়াও দুমকা ও ঝাড়খণ্ডেও তাঁরা একাধিক কর্মসূচি পালন করছেন। তিনি জানিয়েছেন, গত ২৮ ফেব্রুয়ারি তাঁরা প্রথমে কলকাতায় আসেন। সেখানে তাঁদের করোনাভাইরাস নিয়ে পরীক্ষা করা হয়। তারপরই তাঁদের ছাড়া হয়। কলকাতা থেকে তাঁরা প্রথমে যান দুমকা এবং সেখান থেকে বুধবার রাতে তাঁরা বর্ধমানে আসেন। বর্ধমানের একটি হোটেলে তাঁরা রাত কাটিয়ে এদিন সকালে তাঁরা আসেন জামবনি গ্রামে।
এদিন আচমকা ৩ ইতালিয়ানকে গ্রামে দেখে রীতিমতো চাঞ্চল্য ছড়ায় গোটা এলাকায়। খবর পেয়ে এদিন রীতিমত গ্লাভস ও মাস্ক পরে পুলিশ ও প্রশাসনের কর্তারা হাজির হন জামবনি গ্রামে। সেখানে তাঁরা কথা বলেন ওই ইতালিয়ানদের সঙ্গে। তাঁদের পাসপোর্ট, ভিসাও পরীক্ষা করে দেখা হয়। পরিস্থিতির কথা বিবেচনা করেই এদিন এই তিন বিদেশিনী ফেরত যাওয়ার কথা বলা হয়। তারপরই পুলিশ গুসকরা-মানকর রোড দিয়ে এসকর্ট করে তাঁদের ২ নম্বর জাতীয় সড়কে পাঠিয়ে দেওয়া হয়।
জানা গেছে, এই তিন ইতালিয়ান ঝাড়খণ্ডের উদ্দেশে রওনা দিয়েছেন। শর্মিষ্ঠাদেবী জানিয়েছেন, এই তিন ইতালিয়ান এর আগেও এখানে এসেছেন। চারিদিকে করোনাভাইরাস নিয়ে আতঙ্ক চলছে। খুব স্বাভাবিক ভাবেই তাঁদের ঘিরে চাঞ্চল্য ছড়ায়। যদিও শর্মিষ্ঠাদেবী দাবি করেছেন, এই তিনজন ভারতে এসেছেন প্রায় ১৪ দিন। এমনকী তাঁরা সম্পূর্ণ সুস্থ। তাঁদের কোনও অসুবিধাও নেই।