মহানগর ওয়েবডেস্ক: বা দিকে পড়ে রয়েছে চশমা, সামনে সাদা ধবধবে কি-বোর্ড। ডান দিকে ওষুধ। মাঝে নিস্তেজভাবে মাথা ঝুঁকিয়ে শুয়ে রয়েছেন একজন মহিলা স্বাস্থ্যকর্মী। করোনা তাঁকে ছুঁতে পারেনি। তবে তাঁর পারিপার্শ্বিক ও বহু আত্মীয়স্বজনের প্রাণ কেড়েছে সে। কোভিড ১৯-এর কবলে যখন গোটা বিশ্ব ত্রস্ত, তখন ইতালির এক মহিলা স্বাস্থ্যকর্মীর এই ছবি হৃদয় কাঁপিয়েছে নেটিজেনদের। ছবিটি ভাইরালও হয়েছে দ্রুতগতিতে।
ছবিতে থাকা এই নার্সের নাম এলিনা প্যাগলিয়ারিনি। তিনি ইতালির অর্থনৈতিক রাজধানী হিসেবে পরিচিত লমবার্ডি এলাকার বাসিন্দা। ইউরোপের অন্যতম জনপ্রিয় দেশে করোনার ছোবলে এই লমবার্ডি শহরই সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। শেষ পাওয়া খবরে, ইতালিতে আক্রান্তের সংখ্যা ১৪০০ ছাড়িয়েছে। আক্রান্তের সংখ্যা ২১,০০০। লমবার্ডির এই শহরে চিকিৎসা ব্যবস্থা অত্যাধুনিক হলেও আক্রান্তদের আইসোলেশনে রাখার মতো পরিকাঠামোর যথেষ্ট অভাব রয়েছে। অভাব রয়েছে পর্যাপ্ত পরিমাণ স্বাস্থ্যকর্মীরও। কেননা বহু স্বাস্থ্যকর্মীও আক্রান্ত হয়েছেন এই ভাইরাসে।
তবে এলিনা এলিনা প্যাগলিয়ারিনির মতো জনাকয়েক নার্স রয়েছেন, যারা ভালোবাসার দেশটাকে আবার সুস্থ করে তোলার যাবতীয় চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন নিরলসভাবে। বাড়ি-ঘর, নাওয়া-খাওয়া ভুলে কেবলই কাজ করে যাচ্ছেন কম্পিউটারের সামনে বসে। অমানুষিক চাপ ও সাবধানতা নিয়েই কাজ করতে হচ্ছে তাঁদের। তবে নিজের ক্লান্ত ছবি ইন্টারনেটে ভাইরাল হওয়ায় একেবারেই খুশি হননি এলিনা।
এলিনা বলছেন, ‘সব জায়গায় আমার ছবি দেখে একটু বিরক্ত লাগছিল। নিজের দুর্বলতা কাউকে দেখাতে চাইনি। তবে পরে ভালো লাগছিল, অনেকেই আমার চেষ্টাকে সাধুবাদ জানান। প্রচুর সুন্দর সুন্দর শুভেচ্ছা পাই।’ দিন-রাত কাজ করেও তিনি যে একটুও ক্লান্ত নন সেটাও বলেছেন। ‘আমার শারীরিকভাবে একটুও ক্লান্ত লাগছে না। প্রয়োজন হলে আমি টানা ২৪ ঘণ্টা কাজ করে যেতে পারি। কিন্তু এটা লুকিয়ে লাভ নেই, আমি কার বিরুদ্ধে লড়ছি নিজেও জানি না। তাই এখন অদ্ভুত ধরনের অনুভূতি হচ্ছে।’