নিজস্ব প্রতিবেদক, বাঁকুড়া: কথায় বলে চোর পালালে বুদ্ধি বাড়ে। এবার সেটাই চোখে পড়ছে মল্লভূম বাঁকুড়ার বুকে। জেলার বিষ্ণুপুর মহকুমার পাত্রসায়ের থানার সাহাপুরের মোরাম খাদানে ধসে চাপা পড়ে দুই ব্যাক্তির মৃত্যুর ঘটনায় এবার নড়েচড়ে বসল মহকুমা প্রশাসন। খাদানে মোরাম তোলার বৈধ অনুমতি ছিল কিনা তা দ্রুত খতিয়ে দেখার জন্য ভুমি সংস্কার দফতরকে ইতিমধ্যেই নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে তদন্ত করে যথাযথ ব্যবস্থা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে সংশ্লিষ্ট পাত্রসায়ের থানাকেও।
বাঁকুড়া জেলার পাত্রসায়ের থানার সাহাপুর গ্রামের কাছেই শনিবার বিকালে ধসে চাপা পড়ে মৃত্যু হয় খাদানের মালিক গিয়াসুদ্দিন ও স্থানীয় পে লোডার চালক অরুন পাত্র নামে দুই ব্যাক্তির। এই ঘটনার খবর ছড়িয়ে পড়তেই নড়েচড়ে বসে প্রশাসন। ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায় নির্মীয়মান প্রধানমন্ত্রী সড়ক যোজনার রাস্তার পাশেই বিশাল এলাকা জুড়ে তৈরি হয়েছে গভীর এই মারণখাদ। স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি এই খাদান থেকে প্রতিদিন কয়েকশো ডাম্পার মোরাম কেটে অন্যত্র সরবরাহ করা হত। পে লোডার দিয়ে অবৈজ্ঞানিক ভাবে যে ওই খাদানে মোরাম কাটা হত তার ছাপ স্পষ্ট। ভুস্তর থেকে প্রায় ত্রিশ ফুট গভীর পর্যন্ত মাটি কেটে মোরাম তোলা হয়েছে ওই খাদানে। অবৈজ্ঞানিক ভাবে মোরাম কাটার ফলে খাদানের বিভিন্ন অংশে এখনও ঝুলন্ত অবস্থায় রয়েছে মোরামের চাঙড়।
জানা গিয়েছে, ঘটনার সময় প্রখর রোদ থেকে বাঁচতে এমনই এক ঝুলন্ত চাঙড়ের নিচে আশ্রয় নিয়েছিলেন খাদানের মালিক গিয়াসুদ্দিন ও পে লোডার চালক অরুন পাত্র। সেসময়ই মোরামের চাঙড় ধসে পড়ে মৃত্যু হয় ওই দুজনের। স্থানীয়দের অনেকেই বলছেন রাস্তার ধারে এতটা গভীর খাদ করে যে মোরাম তোলা হচ্ছিল তা জানতেন না স্থানীয়দের অনেকেই। রাস্তার ধারে এই ধরনের মরণ ফাঁদ তৈরি করার অনুমতি কোন দফতর দিয়েছিল তা নিয়েও প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। প্রশাসনের তরফে গোটা ঘটনা খতিয়ে দেখে উপযুক্ত পদক্ষেপের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে স্থানীয় পাত্রসায়ের থানা ও ভূমি দফতরকে।