নিজস্ব প্রতিবেদক, বর্ধমান: বিশ্ব নারী দিবসের দিন বর্ধমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের প্রসুতি বিভাগে সদ্যজাত এক কন্যা সন্তানকে মুখের মধ্যে গজ ভরে, গলায় শ্বাসরোধ করে খুনের চেষ্টা করার অভিযোগ উঠল খোদ ঠাকুমার বিরুদ্ধে। ছেলের বউয়ের পরপর কন্যা সন্তান হওয়ায় তিনি এই ঘটনা ঘটিয়েছেন বলে মনে করা হচ্ছে। এই ঘটনার জেরে হাসপাতালের চিকিৎসকদের অভিযোগে পুলিশ আটক করেছে অভিযুক্ত ঠাকুমা চাঁপা রায়কে।
হাসপাতাল সুত্রে জানা,গেছে, বাঁকুড়ার পাত্রসায়ের থানার ভুতুরা গ্রামের বাসিন্দা পুজা রায় শুক্রবার সকালে প্রসব যন্ত্রণা নিয়ে বর্ধমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হয়। বেলার দিকে তিনি দুটি যমজ কন্যা সন্তানের জন্ম দেন। পুজার একটি কন্যা সন্তান রয়েছে তিন বছরের। ফের যমজ কন্যা সন্তান হওয়ায় তা মেনে নিতে পারেননি পুজার শাশুড়ী চাঁপা রায়। আর তাই শুক্রবার বিকালে এক কন্যা সন্তানকে মেরে ফেলার চেষ্টা করেন তিনি। হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসকদের চোখে পড়ে যাওয়ায় অল্পের জন্য প্রাণে রক্ষা পায় শিশুটি। আর এই ঘটনায় চিকিৎসকরা চাঁপাদেবীকে পুলিশের হাতে তুলে দেন।
যদিও এত কাণ্ডের পর চাঁপা রায় জানিয়েছেন, তিনি সদ্যোজাতকে মারার চেষ্টা করেননি। জন্মানোর পর তার কোলে দেওয়ায় তিনি আদর করছিলেন। কার্যত, বিশ্ব নারী দিবস নিয়ে যখন রাজনৈতিক দলগুলি রাস্তায় নেমে নারীদের অধিকার নিয়ে বিস্তর চেঁচামেচি করছে সেই সময় বর্ধমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের এই ঘটনা চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিল নারীরা আজও সেই তিমিরেই পড়ে রয়েছে। কন্যশ্রী থেকে রূপশ্রী মায় বেটি বাঁচাও বেটি পড়াও, কোন কিছুই কাজে আসছে না। কারণ যিনি মারতে যাচ্ছিলেন তিনিও নারী, আর যাকে মারতে যাচ্ছিলেন সেও আগামীদিনের পরিপুর্ণ নারী হয়ে ওঠার কুঁড়ি।