ডেস্ক: আড়াই বছরের ছোট্ট ঐত্রির মৃত্যুতে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের উপর গাফিলতির অভিযোগ ক্রমশ স্পষ্ট হয়ে উঠছে। স্বাস্থ্য কমিশনের শুনানিতে এদিন মুকুন্দপুর আমরির নথি এবং নার্সের বয়ানে উঠে এলো চাঞ্চল্যকর তথ্য। এরফলে চিকিৎসায় গাফিলতির অভিযোগ আরও দৃঢ় হল বলে মনে করা হচ্ছে।
ঐত্রি-কে কতবার অ্যান্টিবায়োটিক ইঞ্জেকশন দেওয়া হয়েছিল? এই প্রশ্নের উত্তরে নার্সের বয়ান এবং হাসপাতালের মেডিক্যাল রিপোর্টে বিস্তর ফারাক পাওয়া গিয়েছে। কর্তব্যরত নার্স দাবি করেছেন, ঐত্রিকে কোনও অ্যান্টিবায়োটিক ইঞ্জেকশন দেওয়া হয়নি, বরং দেওয়া হয়েছিল অ্যান্টাসিড ইঞ্জেকশন। কিন্তু হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের তরফে প্রকাশিত নথিতে দেখা গিয়েছে, ১৫ জানুয়ারি দুপুর ১২:৪৫ থেকে ১৬ জানুয়ারি রাত ১১:৪৫ পর্যন্ত তিনবার অ্যান্টিবায়োটিক ইঞ্জেকশন দেওয়া হয়েছিল। ফলে স্বাস্থ্য কমিশনের শুনানিতে কার্যত সাফ হয়ে গেল হাসপাতাল কর্তৃপক্ষেরের গাফিলতির কারণেই মৃত্যু হয়েছিল ঐত্রির।
শুনানিতে স্বাস্থ্য কমিশনের সামনে মুখ পোড়ে আমরি কর্তৃপক্ষের। জানা গিয়েছে, ইনজেকশনের লেবেলে ১.৬ এমজি লেখা ছিল যা ১.৬ এমএল দেওয়া উচিত ছিল ঐত্রিকে। কিন্তু ৬ বার সেই ইঞ্জেকশন দেওয়া হয় আড়াই বছরের শিশুটিকে। আমরি কর্তৃপক্ষকে ফের হলফনামা দেওয়ার নির্দেশ দিয়ে চলতি মাসের ২৩ তারিখ ফের ঐত্রির মৃত্যু শুনানি করবে কমিশন।
এর আগে ময়নাতদন্তেও উঠে এসেছিল হৃদযন্ত্রের কোনও সমস্যাই ছিল না ঐত্রির। শরীরে অক্সিজেনের অভাবে শ্বাসকষ্টজনিত কারনেই মৃত্যু হয়েছে তার। ওই রিপোর্টে স্পষ্ট উল্লেখ করা হয়েছে, কোনও অ্যালার্জি টেস্ট ছাড়াই ইন্ট্রাভেনাস করা হয় ঐত্রির শরীরে। আর সেই চ্যানেল দিয়েই অগমেন্টিন ওষুধ দেওয়া ঐত্রির শরীরে। কোনও অ্যালার্জি টেস্ট ছাড়াই এই ওষুধ দেওয়ার ফলেই শ্বাসকষ্ট জনিত সমস্যা দেখা যায় ঐত্রির শরীরে ধীরে ধীরে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে সে।
উল্লেখ্য, গত ১৭ জানুয়ারি আমরি মুকুন্দপুর হাসপাতালে মৃত্যু হয় ঐত্রি দের। ঘটনায় চিকিৎসায় গাফিলতির অভিযোগ তোলে পরিবার। অভিযোগ দায়ের করা হয় পূর্ব যাদবপুর থানায়। পথে নেমে বিক্ষোভ দেখায় শিশুর পরিবার। ঘটনায় চাপে পড়ে অভিযুক্ত ইউনিট হেড জয়ন্তী চট্টোপাধ্যায়কে বরখাস্ত করে আমরি কর্তৃপক্ষ। অবশেষে পরিবারের দাবিতেই শিলমোহর দিল ময়না তদন্তের রিপোর্ট।