ডেস্ক: শীর্ষ নেতৃত্বের কোপের মুখে পড়েছেন তৃণমূল নেতা তথা কলকাতার মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায়। বর্তমানে তাঁকে ঘিরে শুরু হয়েছে জল্পনা। এরই মাঝে সেই জল্পনার পারদ আরও চড়ালেন মেয়র নিজেই। কাউন্সিলরদের সইয়ের আবেদন ফিরিয়ে নিজেই জানালেন, ‘আমি আর তোদের নেতা নই সই আমি করব না।’
বেশকিছু ধরেই জল্পনার শিখরে রয়েছেন শোভন চট্টোপাধ্যায়। দলের শীর্ষ নেতৃত্বের বিরাগভাজন হয়ে কিছুটা কোনঠাসা তিনিও। সাংবাদিকদের থেকেও এড়িয়ে চলেছেন শোভনবাবু। এরই মাঝে এদিন শোভনবাবুর কাছে পুরোসভার কাগজে সই করাতে যান ৩ কাউন্সিলর। তাঁদের শোভনবাবু স্পষ্ট জানিয়ে দেন, ‘তাঁদের সরাসরি তিনি জানিয়ে দেন, তিনি আর তাঁদের নেতা নন সুতরাং সই তিনি করবেন না। এদিকে অসমর্থিত সূত্রে খবর পাওয়া গেছে, শোভন চট্টোপাধ্যায় ইস্তফা দিয়েছেন মেয়র পদ থেকে। তাঁর পদত্যাগপত্র তিনি পাঠিয়ে দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রীর কাছেও। আলোচনা চলছে মন্ত্রীসভা থেকে ইস্তফা দেওয়া নিয়ে। খুব শীঘ্র সেখান থেকেও ইস্তফা দেবেন শোভন।
উল্লেখ্য, গত বেশ কয়েকদিনে বহুবার তাঁর উপর ক্ষুব্ধ হয়েছে দল। প্রথমত, কলকাতার মেয়র হওয়া সত্ত্বেও ইদানিংকালে বেহিসেবি জীবনযাপন শুরু করেছেন মেয়র। স্ত্রী রত্না চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে তাঁর ঝামেলা, দল সহ সাধারণ মানুষের কাছেও তাঁর ভাবমূর্তি নষ্ট করেছে। যাতে অত্যন্ত অসন্তুষ্ট দল। প্রশাসনিক কাজে তাঁর ঔদাসিন্য ছাড়াও শুক্রবার কোরকমিটির বৈঠকে যোগ না দেওয়ায় তাঁর উপর বেজায় অসন্তুষ্ট হন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। শুধু তাই নয়, শনিবার পুরসভার ২০১৮- ১৯ অর্থবর্ষের আর্থিক বাজেট পেশের দিনও প্রথম থেকে সেখানেও অনুপস্থিত ছিলেন মেয়র। তাঁর অবর্তমানে চেয়ারপার্সন মালা রায় পুরোকর্মীদের বাজেট পুস্তিকা বিলির পরামর্শ দেন। মেয়রের অনুপস্থিতিতে এই বাজেট অধিবেশন নিয়ে হইচই শুরু করেন বিরোধীরা। তার বহু পরে সভাকক্ষে ঢোকেন মেয়র।
গত কয়েকদিন ধরে মেয়রের এইসব কারনের জন্য বেজায় অসন্তুষ্ট শীর্ষ নেতৃত্ব। দলীয় ও প্রশাসনিক দায়িত্ব পালনে শোভন চট্টোপাধ্যায়ের ঔদাসিন্য চরম পর্যায়ে পৌঁছেছে। বারে বারে দলের তরফে দূত পাঠানো সত্ত্বেও সতর্ক হননি তিনি। বরং কাজের ঔদাসিন্য তাঁর আরও বেড়েছে। ফলে দলের অন্দরেও বেড়েছে অস্বস্তি। তৃণমূলের অন্দরমহল সূত্রের খবর, দীর্ঘদিন ধরে এই বিষয়গুলি দেখার পর তাঁকে প্রথম সতর্ক করা হয় তাঁর নিরাপত্তা কমিয়ে। আগে যেখানে জেড প্লাস ক্যাটাগরির নিরাপত্তা পেতেন তিনি, তা কমিয়ে জেড ক্যাটাগরির নিরাপত্তা দেওয়া হয় তাঁকে। তাতেও কোনও ভ্রূক্ষেপ দেখা যায়নি শোভনের। ফলস্বরুপ তাঁর উপর যারপরনাই রুষ্ট দলের শীর্ষ মহল।