মহানগর ওয়েবডেস্ক: দেশের অন্যতম সেরা বাঁহাতি অলরাউন্ডার। ক্যান্সারকে সঙ্গী করেই দেশকে দুটি বিশ্বকাপ দিয়েছেন। তা সত্ত্বেও ক্রিকেট জীবনের সায়াহ্নে এসে জুটেছে কেবল অবহেলা। ২০১৯ বিশ্বকাপ খেলে অবসর নেওয়ার ইচ্ছাও বহুদিন আগে থেকে প্রকাশ করে আসছিলেন। যদিও সেই ইচ্ছার মর্যাদা দেয়নি বোর্ড। ফলে অবসর নিয়ে নেন ক্রিকেট থেকেই। তবুও এইবারের বিশ্বকাপে জাতীয় দলের প্রতিনিধিত্ব করার ইচ্ছাটা পূরণ না হওয়ার দুঃখটা যেন কিছুতেই ভুলতে পারছেন না যুবরাজ সিং।
সম্প্রতি সর্বভারতীয় এক সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে যুবরাজ বলেন,
‘সত্যিই ২০১৯ বিশ্বকাপটা খেলার খুব ইচ্ছা ছিল। এর আগে ২০১৫ বিশ্বকাপে আমায় বাদ দেওয়া হয়েছিল। যদিও সেই সময় রঞ্জিতে বেশ ভাল স্কোর করেছিলাম। অনেক ব্যাপার আছে যেগুলো হয়তো বলা যায় না। এবার বিশ্বকাপের সময় আমার বয় ছিল ৩৭। অনেক কিছুই আমার ইচ্ছা মতো হয়নি। তবে যাই হোক, আমি যে পরিমাণ ক্রিকেট খেলতে পেরেছি, তাতে আমি খুশি। আমার মনে হয় সঠিক সময়েই অবসর নিয়েছি।’
২০০৭ টি-২০ বিশ্বকাপ ও ২০১১ বিশ্বকাপ জয়ের অন্যতম নায়ক ছিলেন যুবি। সেই প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘২০০৭ সালে আমাদের দল নতুন, ক্যাপ্টেন নতুন। সেই কারণেই হয়তো মন খোলা রেখে ক্রিকেটটা খেলতে পেরেছিলাম। সেই জয়টাই ২০১১ সালে আমাদের সাহায্য করেছিল। গ্যারি কার্স্টেন বা লালচাঁদ রাজপুতের কাছ থেকেও অনেক শিখেছি। খেলোয়াড়রাও নিজেদের সেরা সময়ে ছিল। ফলে ২০১১ বিশ্বকাপ জয় যেন আমাদের ভাগ্যেই ছিল।’
২০১৭ সালে চ্যাম্পিয়নস ট্রফির পর হঠাৎ করেই দল থেকে বাদ পরে যান যুবি।
‘২০১৭ চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে ৯টা ম্যাচের মধ্যে ২টিতে ম্যাচের সেরা হয়েছিলাম। তা সত্ত্বেও আমায় ছেঁটে ফেলা হয়। আমি চোট পাই, আমায় বলা হয় শ্রীলঙ্কা সিরিজের জন্য প্রস্তুতি নিতে। কিন্তু তারপর ইয়ো ইয়ো টেস্টের ব্যাপারটা আসে। সেই সময় ৩৬ বছর বয়সে আমায় বলা হয় এই টেস্টের জন্য প্রস্তুত হতে। আমি কিন্তু ইয়ো ইয়ো টেস্টে পাশ করেছিলাম। কিন্তু আমায় বলা হয় ঘরোয়া ক্রিকেট খেলতে। আসলে নির্বাচকরা ভাবেননি যে আমি টেস্টে পাশ করব।’
‘খারাপ লাগে ১৫-১৬ বছর ধরে দেশের হয়ে খেলার পর হঠাৎ করেই দল থেকে বাদ দিয়ে দিলে। সেই সময় কেউ কিছু জানায়ও নি। শুধু আমি নয়, বীরেন্দ্র সেহবাগ বা জাহির খানের সঙ্গেও এইটাই করা হয়েছিল। আমার মনে হয়, টিম ম্যানেজমেন্টের উচিত ছিল আমাদের সঙ্গে কথা বলা। কেন আমাদের বাদ দেওয়া হল, বা তাঁদের মাথায় যদি তরুণদের জায়গা দেওয়ার চিন্তা থাকে, সেটাও আমাদের জানানো উচিত ছিল। সেই সময় খুব খারাপ লেগেছিল। কিন্তু সেই সব ঘটনা অনেক দিন আগে হয়ে গিয়েছে। এখন আর সেই নিয়ে মন খারাপ করি না’, হতাশা ঝরে পরে যুবরাজ সিংয়ের গলায়।