মহানগর ডেস্ক: কাঁথিতে পরপর দু’দিন হাইভোল্টেজ জনসভা। বুধবার তৃণমূলের সভার ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই বৃহস্পতিবার কাঁথিতে ৫ কিলোমিটার পদযাত্রা শেষে সভা করলেন বিজেপি নেতা শুভেন্দু অধিকারী। যদিও, বিজেপিতে যোগ দেওয়ার পর কাঁথিতে এটাই তাঁর প্রথম রাজনৈতিক সভা। আর বৃহস্পতিবার কাঁথির প্রেস্টিজ ফাইটের সভা থেকে সরাসরি তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে চ্যালেঞ্জ ছুঁড়লেন বিজেপি নেতা শুভেন্দু অধিকারী। বললেন, “৭ তারিখ নন্দীগ্রামে আসুন, ভাষণ দিন। আমি জানি আমার বিরুদ্ধে আপনি কী বলবেন। ৮ তারিখ আমি সভা করব। পাল্টা সভা করে আমি আপনার সব কথার জবাব দেব। আপনি প্রশাসনিক ক্ষমতাবলে লোক আনবেন। আর আমার সভায় লোক আসবে ভালবাসা ও আবেগে।”
বুধবারই শুভেন্দুর গড়ে সভা করেছিলেন তৃণমূলের ‘হেভিওয়েট’ নেতারা। ছিলেন প্রবীণ সাংসদ সৌগত রায়, মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিমের মতো নেতারা। ‘বিশ্বাসঘাতক’, ‘ধান্দাবাজ’ বলে শুভেন্দুকে বেনজির আক্রমণ করেছিলেন রাজ্য নেতারা। আর বৃহস্পতিবারের সভামঞ্চ থেকে শুভেন্দু বললেন, “আমি একজন সাধারণ ভোটার। আমি ভারতীয় জনতা পার্টির সদস্যপদ চেয়েছি। যদি সত্যিই আমার পরিচয় শিশির অধিকারীর ছেলে হয়ে থাকে, তবে তোমরা এত হাঁপাচ্ছ কেন?” তাঁর আরও আক্রমণ, “বক্তৃতা করেই যদি সব হতে পারে, তবে নন্দীগ্রাম হত না। টিকিট পায়নি বলে তৃণমূল নেত্রীর বাড়ি ঢিল মারতে গেলাম। আমফানে কি করলেন সেই মেয়র?” এমনকি কটাক্ষ করতে ছাড়েননি বর্ষীয়ান সাংসদ সৌগত রায়কেও। তিনি বলেন, “আরেকজন আমার অধ্যাপক। তাঁকে মানি। কেউ পাত্তা দেয়নি এতদিন। শুভন্দু চলে যাওয়ার পর পাত্তা পাচ্ছেন। পায়ে কাঁটা ফুটলে ল্যাংড়ায় সবাই। শুভেন্দু সেই কাঁটা।”
“বৃহস্পতিবারের পদযাত্রায় মানুষ স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশগ্রহণ করেছেন। সাধারণ মানুষ রাস্তায় বেরিয়ে এসেছেন। তাঁরা প্রমাণ করে দিয়েছেন যে, আমি কোনও ভুল সিদ্ধান্ত নেইনি। আমার সিদ্ধান্ত সঠিক ছিল।” বক্তৃতায় বললেন আত্মবিশ্বাসী শুভেন্দু। তবে বিরোধীদেরকে একথাও বুঝিয়ে দিলেন, “জনগণের শিলমোহর আমি পেয়ে গিয়েছি। গণতন্ত্রে মানুষই শেষ কথা বলে। ডেমোক্র্যাসি মানে অফ দ্য পিপল, ফর দ্য পিপল, বাই দ্য পিপল। স্বামীজির চরৈবতি মন্ত্রকে সামনে রেখেই এবার এগিয়ে যেতে চাই।”
যদিও, রাজনৈতিক কারবারীদের একাংশের মতে, বুধবার তৃণমূলের পর আজ কাঁথিতে নিজের গড় কার্যত ‘পরীক্ষা’র লড়াই ছিল শুভেন্দু অধিকারীর। যদিও, বিজেপিতে যোগ দেওয়ার পর প্রত্যয়ী শুভেন্দুর গলায় আজও ফুটে উঠল “উনপঞ্চাশকে একান্ন করতে এসেছি। গোপীবল্লভপুরের দিলীপ ঘোষ আর নন্দীগ্রামের শুভেন্দু দু’জনে হাত মিলিয়েছি। লালমাটি আর জঙ্গলমহলের মাটি হাত মিলিয়েছে। যেতে তোমাকে হবেই। পদ্ম ফুটিয়ে আমি ঘুমোতে যাব। আমি আর দিলীপ ঘোষ জঙ্গলমহলে ৩৫টা আসন জেতাব।”
এই সভায় শুভেন্দু আরও বলেন, “দিদিমণি এবারও আপনি এখানে দ্বিতীয় হবেন। প্রথম হবে বিজেপি।” এরপর তাঁর সাফ কথা,”এটা ট্রেলার দেখছেন। সিনেমাটা বাকি রয়েছে।”