মহানগর ডেস্ক: গালওয়ানের রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের প্রায় আটমাস দীর্ঘ আলোচনার পর সেনা প্রত্যাহারে সম্মত হয়েছে ভারত ও চিন। চিনের সঙ্গে সমঝোতার পর এবার ভারত-পাক সীমান্তে নিয়ন্ত্রণরেখায় অস্ত্রবিরতি চুক্তিতে সম্মত হল দুই দেশ। প্রতিদিন গুলির শব্দ আর হয়ত শুনতে হবেনা কাশ্মীরবাসীকে। আর হয়তো প্রাণ হারাতে হবেনা কোনও নিরীহ কাশ্মীরের বাসিন্দাকে।
যদিও এর আগে ২০০৩ সালে মনমোহন জামানায় ভারতের সঙ্গে ‘আনুষ্ঠানিক’ অস্ত্রবিরতি চুক্তিতে সম্মত হয় পাকিস্তান। তারপর সেই চুক্তি লঙ্ঘন করে বারংবার গুলির শব্দ উত্তপ্ত হয়ে ওঠে কাশ্মীর। কাশ্মীরে শান্তি ফিরিয়ে আনার জন্য রাষ্ট্রপুঞ্জের হস্তক্ষেপেও পরিস্থিতির বদল হয়নি একটুও। ২০১৪তে নরেন্দ্র মোদি ক্ষমতায় আসার পর থেকে আরও খারাপ হয় পরিস্থিতি। ২০১৬ সালে পাঠানকোটে বিমানবাহিনীর ঘাঁটিতে জঙ্গি হামলার পরই শান্তি আলোচনা বন্ধ করে দেয় ভারত। অবশেষে দুই দেশের সেনা আধিকারিকরা(ডিজিএমওস) টেলিফোনে দীর্ঘক্ষণ আলোচনার পরেই অস্ত্র বিরতি চুক্তিতে সম্মত হয়েছে বলে সূত্রের খবর। তবে পাকিস্তান যদি আবার চুক্তি লঙ্ঘন করে, তাহলে ভারতও কিন্তু থেমে থাকবেনা বলেই স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক উচ্চ পদস্থ সেনা আধিকারিক। শুক্রবার মধ্যরাত থেকেই এই চুক্তি কার্যকর হবে বলে জানা যাচ্ছে।
অন্যদিকে, শ্রীলঙ্কায় বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সংক্রান্ত একটি সম্মেলনে ভাষণ দিতে গিয়ে গতকাল ভারতের নামে ভূয়সী প্রশংসা করতে দেখা যায় পাক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানকে। সেখানে তিনি বলেন, ‘কাশ্মীর ছাড়া ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে আর কোনও সমস্যা নেই।’ তবে কাশ্মীর সমস্যা আলোচনার মাধ্যমেই মিটিয়ে ফেলা সম্ভব বলেই তিনি মনে করেন। তিনি বলেন, ‘ ভারতের সঙ্গে আলোচনার প্রস্তাব দিলেও সাড়া দেয়নি ভারত। তবে আমি আশাবাদী, ভারত আলোচনার প্রস্তাবে সারা দেবে।’
প্রসঙ্গত, ১৯৪৭-এ স্বাধীনতার পর থেকে উভয় দেশই কাশ্মীরকে নিজেদের বলে দাবি করে আসছে। যার জেরে যুদ্ধেও জড়িয়েছে দুই দেশ। পাকিস্তানের দাবি, চলতি বছরেই ১৭৫বার যুদ্ধবিরতি চুক্তি লঙ্ঘন করেছে ভারত। যার ফলে প্রায় ২৮জন বেসামরিক ব্যক্তি প্রাণ হারিয়েছেন বলে দাবি পাক মন্ত্রকের। অন্যদিকে ভারতীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের তথ্য অনুযায়ী, শুধুমাত্র ২০২০ সালেই অন্তত পাঁচ হাজারের বেশি সময় যুদ্ধবিরতি চুক্তি লঙ্ঘন করেছে পাকিস্তান। তবে নতুন করে যুদ্ধ বিরতি চুক্তির ফলে কাশ্মীরে শান্তি ফিরতে পারে বলেই আশাবাদী আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিষয়ে সচেতন মহল।