মহানগর ওয়েবডেস্ক: রাজনৈতিক সংঘর্ষে বাড়বাড়ন্তের জেরে মাঝে মধ্যেই জাঙ্গীপাড়ার নাম উঠে আসে সংবাদ শিরোনামে। শাসক দলের দ্বারা কখনও বিজেপি কর্মী আক্রান্ত, তো আবার কখনো বিজেপির দ্বারা শাসক দলের নেতারা আক্রন্ত, এমন ঘটনা ঘটেছে বহুবার। তবে ক্ষমতায় থেকে বিজেপির ‘বেয়াদপি’ সহ্য করতে রাজি নয় শাসকদল। ফলস্বরূপ দলীয় কর্মীদের চাঙ্গা করতে পাল্টা মার হিসাবে, বিজেপি কর্মীদের হাত পা ভেঙে দেবার পরামর্শ দিলেন শ্রীরামপুরের সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়। গত ৬ নভেম্বর বিজেপি সভা করেছিল জাঙ্গীপাড়ার রাজবলহাটে, তার পাল্টা হিসাবে ১৬ নভেম্বর একই জায়গায় সভা করল তৃণমূল। আর এই সভামঞ্চ থেকে দলীয় কর্মীদের উদ্দ্যেশে বিজেপির বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্য দলীয় কর্মীদের উদ্বুদ্ধ করতে এমনই উপদেশ দিলেন শ্রীরামপুরের তৃণমূল সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়।
কয়েক মাস আগে তৃণমূল বিজেপি সংঘর্ষে রাজবলহাটে তৃণমূল নেতা তুষার রক্ষিতের হাত ভেঙে যায়। সেই ঘটনায় অভিযোগ উঠেছিল বিজেপি কর্মীদের বিরুদ্ধে। একাধিক বার দলীয় কার্যালয় ভাঙচুরেরও অভিযোগ ওঠে বিজেপির বিরুদ্ধে। শনিবার রাজবলহাটের জনসভায় যখন কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় ভাষণ দিচ্ছিলেন তখন তুষার রক্ষিতও ছিলেন সভামঞ্চে সাংসদের পাশে দাঁড়িয়ে। সেই তৃণমূল নেতাকে সামনে রেখেই সাংসদ কর্মী সমর্থকদের উদ্দ্যেশে সাংসদ বলেন, ‘বিজেপি যদি আপনার হাত-পা ভেঙে থাকে আপনি ও বিজেপির হাত-পা ভাঙুন। না হলে জলে ডুব দিয়ে মরুন’। সেই সঙ্গে তুষার রক্ষিতকে লক্ষ্য করে বলেন, ‘কিসের ভয় আপনার, ভয় পেলে পদ ছেড়ে দিয়ে বাড়িতে চলে যান, বড়িতে গিয়ে বসে থাকুন। অনেক ছেলে তৈরী আছে’। এরপরই হিন্দি শোলে সিনেমার সেই বিখ্যাত গব্বর সিং-এর ডায়লগ মনে করিয়ে দেন তিনি। বলেন, ‘যো ডর গ্যায়া, ও মর গ্যায়া’। পুনরায় তুষার বাবুকে লক্ষ্য করে বলেন, ‘আপনি ভয় খেয়েছেন, না ভয় খাননি। যদি ভয় খান তবে জলে গিয়ে ডুবে মরে যান। আর যদি ভয় না খান তবে লড়তে হবে। কে বিজেপি কে সিপিএম? অনেক লড়াইয়ের মধ্যে দিয়ে আমরা জিতে এসেছি। এই লড়াইকে আমাদের জারি রাখতে হবে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নাম নিয়ে তো একটা হিমালয় পেরিয়ে যেতে পারি, বিজেপি তো দূরের কথা’।
উল্লেখ্য, জাঙ্গীপাড়া বিধানসভাটি শ্রীরামপুর লোকসভার মধ্যে অবস্থিত। গত লোকসভায় জেলার তিনটি লোকসভার মধ্যে শ্রীরামপুরে সবথেকে ভালো করে পুনরায় জয়ী হয়েছিলেন কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়। হুগলি আসনটিতে বিজেপি জয়লাভ করে। অন্যদিকে আরমবাগ আসনটি মাত্র ১১০০ ভোটের ব্যবধানে জিতে কোনক্রমে নিজেদের দখলে রাখে শাসক দল। কিন্তু লোকসভার পর থেকে বিজেপি কার্যকলাপ অনেকটার বেড়ে গেছে জেলায়। ধনিয়াখালি, তারকেশ্বর, খানাকুল, আরামবাগ, পান্ডুয়া, জাঙ্গীপাড়া সহ একাধিক জায়গায় রাজনৈতিক সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে তৃণমূল-বিজেপি। অনেক ক্ষেত্রে শাসক দল বিরোধীদের আক্রমনে পিছু হটে যায়। তাই বিজেপির জনসভার পর সেই একই জায়গায় সভা করে দলীয় কর্মীদের চাঙ্গা করতে আসরে নেমেছে তৃণমূল।