নিজস্ব প্রতিবেদক, পশ্চিম মেদিনীপুর: ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের জন্মের দ্বিশতবর্ষ উপলক্ষ্যে তাঁর জন্মভিটা বীরসিংহ গ্রামে আসেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এদিনের সফরে এসে তিনি বিদ্যাসাগর স্মৃতি মন্দির ও তাঁর প্রতিষ্ঠিত বীরসিংহ ভগবতী বিদ্যালয় পরিদর্শন করেন।
এদিন বিদ্যাসাগরের মূর্তিতে মাল্যদান করে সভামঞ্চ থেকে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ২৬ সেপ্টেম্বর বাংলা তথা ভারতের শিক্ষা ও সমাজ সংস্কারের পথপ্রদর্শক বিদ্যাসাগরের জন্মদিন, যিনি আজীবন কুসংস্কারের বিরুদ্ধে লড়াই করেছেন। এই বিশেষ দিনে এবার থেকে বাংলার প্রত্যেক স্কুল- কলেজে যেন বিদ্যাসাগর নিয়ে পড়ানো হয় এই পরামর্শ দেন তিনি। আরও বলেন, প্রত্যেক কলেজকে বিদ্যাসাগর নিয়ে সেমিনারের জন্য ২ লক্ষ টাকা করে অনুদান দেবে রাজ্য সরকার। সেই সাথে ঘোষণা করা হয়, ‘বিদ্যাসাগর অ্যাকাডেমি’ এবং বিদ্যাসাগর কলেজে ‘বিদ্যাসাগর আর্কাইভ’ গড়ে তোলা হবে। বীরসিংহে এডুকেশন হাব তৈরি হবে ঘোষণা করার পাশাপাশি তিনি এও বলেন, বাংলায় বিদ্যাসাগর নিয়ে গড়ে উঠবে গবেষণাগার।
বাংলা ও বাঙালী সবসময় শিক্ষা, সাহিত্য, সংস্কৃতিতে ভারতকে পথ দেখিয়েছে বলে সভা থেকেই তিনি বলেন, বিদ্যাসাগর কলেজে গুন্ডা বাহিনী তাণ্ডব চালিয়ে তাঁর মূর্তি ভেঙেছিল। রাজ্য সরকার ইশ্বরচন্দ্রের নতুন মূর্তি তৈরি করে তা প্রতিস্থাপন করে। মূর্তি প্রতিস্থাপনকে ‘অকালবোধন’ বলে তিনি বলেন, আসলে বাংলা সংস্কৃতি ভোলানোর চেষ্টা করা হচ্ছে। অথচ বিদ্যাসাগর, রবীন্দ্রনাথ কোন বিশেষ দিনে নয় প্রতি মুহূর্তে জন্ম নেন। ভাষা সংস্কৃতি আগ্রাসন নিয়ে নাম না করে বিজেপিকে আক্রমণ করে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, মাকে সম্মান না জানালে মাসিকে সম্মান জানানো যায়না। নিজের সংস্কৃতিকে আগে জানতে ও ভালোবাসতে হবে। বাংলার মাটি ও ভাষাকে অস্বীকার বা ভয় দেখানো যায়না বলেও হুঁশিয়ারি দেন মমতা। বন্যা প্রবণ এলাকা ঘাটালে মাস্টার প্ল্যান নিয়ে আবার কেন্দ্রের সাথে আলোচনা করে সমস্যার সমাধান করবেন বলে প্রতিশ্রুতি দেওয়ার পাশাপাশি সভার শেষে বলেন, এনআরসি নিয়ে বিজেপিকে ফের আক্রমণ করে বলেন, স্বাধীন ভারতে পরাধীনতা আনার চেষ্টা চলছে। কাউকে কুৎসায় কান না দিতে বলে তিনি বলেন, ১০ বছর ছাড়া ছাড়া আদম সুমারী হয়। তাই যথেষ্ট। কোন রকম এনআরসির কাজ এই রাজ্যে হবেনা।