মহানগর ওয়েবডেস্ক: এমনিতে বড্ড ব্যস্ত তিনি। তার উপর এই বছরে নেমন্তন্নও কম আসেনি। গতবার যেটা ৭৫ নম্বরে নিয়ে থেমে গিয়েছিল এবার সেটা ১০০ ছুঁয়ে ফেলতে পারে বলে জানা যাচ্ছে ঘনিষ্ঠ সূত্রে। ফলে আগেভাগে মাঠে না নামলে তালিকা থেকে বাদ পড়ে যেতে পারেন অনেকেই। ফলস্বরূপ মহালয়ার আগেই পুজো উদ্বোধনের মাঠে নেমে পড়লেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূল সুপ্রিম মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। শুক্রবার বিকেল নাগাদ উত্তর কলকাতার জনপ্রিয় পুজা হাতিবাগান সার্বজনীনের উদ্বোধন করে ফেললেন মমতা।
এদিন বিকেলে হাতিবাগান সার্বজনীনের পর চালতা বাগানের উদ্দেশ্যে রওনা দেন মুখ্যমন্ত্রী সেখানেও বেশ কিছু সময় কাটান তিনি। তবে মহালয়ার আগে এভাবে পুজো উদ্বোধন অনেকের চোখে খটকা লাগলেও, নাবান্ন সূত্রে জানা গিয়েছে এই ছাড়া আর কোনও রাস্তা নেই। কারণ, এবার মুখ্যমন্ত্রীর হাতে বহু পুজো রয়েছে উদ্বোধনের জন্য। কলকাতার পাশাপাশি এবার ভিন রাজ্য থেকেও পুজো উদ্বাধনের ডাক পেয়েছেন মমতা। মুখ্যমন্ত্রীর দপ্তর সূত্রে খবর, এ বছর ইতিমধ্যেই পুজো উদ্বোধনের জন্য মুখ্যমন্ত্রীর কাছে প্রায় ১০ হাজারের বেশি আমন্ত্রণপত্র এসেছে রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে। এছাড়াও দিল্লি, ওড়িশা, মধ্যপ্রদেশ, উত্তরপ্রদেশ, ঝাড়খণ্ডে মতো রাজ্য থেকেও এসেছে পুজোর আমন্ত্রণপত্র। পুজো উদ্বোধনের আবেদন জানিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর কাছে চিঠি এসেছে প্রায় সাড়ে ৩ হাজারেরও বেশি। এর পাশাপাশি রাজ্য সরকাররের গ্রিভান্স সেলের টোল ফ্রি নম্বরে ফোন করেও পুজো অনুরোধ জানাচ্ছেন কেউ কেউ। এমনকী দিদিকে বলোতে ফোন করেও তাদের পুজোতে আসার জন্য মুখ্যমন্ত্রীকে আবেদন জানাচ্ছেন পুজো উদ্যোক্তা। কেউ কেউ আবার মুখ্যমন্ত্রীর কাছে শুভেচ্ছা বার্তা চেয়ে আবেদন জানিয়েছেন। এমন অনুরোধ এসেছে প্রায় ৬ হাজার। সব মিলিয়ে দিদি এবার বেশ ব্যস্ত। ফলে মহালয়া থেকে একেবারে ষষ্ঠী পর্যন্ত পুজো উদ্বোধনের টানা সিডিউল রয়েছে মুখ্যমন্ত্রী।
তবে শুধুমাত্র সময়ের অভাব নয়, এত দ্রুত পুজোর উদ্বোধনের পিছনে রাজনৈতিক কারণও দেখছেন অনেকেই। দুর্গাপুজো নিয়ে বিজেপি-তৃণমূল যে দ্বন্দ্ব বেশ কিছুদিন ধরে হাওয়ার ভাসছিল সেখানে আরও বেশি পুজোর ‘দখলদারি’ হাতে পেতে মরিয়া তৃণমূল। এমতবস্থায় এ বছর আরও আগে থেকেই পুজোর উদ্বোধনের জন্য মাঠে নামলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তবে যেভাবে দেবীপক্ষের আগে থেকেই মুখ্যমন্ত্রী পুজো উদ্বোধনে ঝাঁপালেন, তার পিছনে বিজেপি জুজুই দেখছে রাজনৈতিক মহল।