নিজস্ব প্রতিনিধি: দলত্যাগীদের আর কখনওই দলে ফিরিয়ে নেওয়া হবে না বলে প্রকাশ্য জনসভায় জানিয়েছেন তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। একইসঙ্গে দলের বেসুরো নেতাদের উদ্দেশে কড়া বার্তা দেন তিনি। বলেন, ‘যারা যাব যাব করছেন তারা চলে যান। না হলে ট্রেন ছেড়ে দেবে।‘ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের এই হুঁশিয়ারির পরও দলে বেসুরো নেতাদের সংখ্যা ক্রমশ বেড়েই চলেছে। কয়েকদিন আগেই মন্ত্রিত্ব ছেড়েছেন রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়। গতকাল দলের সমস্ত পদ ছেড়ে দিয়েছেন উত্তরপাড়ার বিধায়ক প্রবীর ঘোষাল। আরও কিছু নেতা এখনও পর্যন্ত বেসুরো গাইছেন। মনে করা হচ্ছে, তাদেরও দলত্যাগ এখন সময়ের অপেক্ষা। এমন আবহে আরও একবার কড়া হয়েছেন দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যা।য় দলের এই পরিস্থিতির কথা মাথায় রেখে আগামী ২৯ জানুয়ারি দলের বিধায়ক-সাংসদদের নিয়ে জরুরি বৈঠক ডাকলেন তিনি। তবে কী বিষয় নিয়ে আলোচনা হবে তা এখনও জানা যায়নি।
এদিকে, পরের দিন ৩০ জানুয়ারি কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ আসছেন রাজ্যে। তাঁর সভা আছে হাওড়ায়। সেখানে বেশ কয়েকজন তৃণমূল নেতা গেরুয়া শিবিরের নাম লেখাতে পারেন বলে জল্পনা চলছে। বিজেপি’র তরফ থেকে দাবি করা হচ্ছে, অন্তত ১০ জন বড় মাপের তৃণমূল নেতা সেদিন অমিত শাহের সভায় উপস্থিত থেকে বিজেপিতে নাম লেখাতে পারেন।
এমন পরিস্থিতিতে দলের সাংসদ-বিধায়কদের মনোভাব বুঝে নেওয়ার জন্য মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বৈঠক ডেকেছেন বলে মনে রাজনৈতিক মহল। দলের সঙ্গে যারা ইতিমধ্যে দূরত্ব তৈরি করে ফেলেছেন, তাদের উদ্দেশে কয়েকদিন আগে হুগলির পুড়শুড়ার সভা থেকে কঠোর বার্তা দিয়েছিলেন দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেখানে তিনি বলেছিলেন, ‘যারা যাব যাব করছেন এখনই চলে যেতে পারেন। পরে গেলে ট্রেন মিস হয়ে যেতে পারে।‘
শুধু হুঁশিয়ারিই নয়। ইতিমধ্যে যারা বেঁকে বসেছেন, তাদের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া শুরু হয়েছে। কয়েকদিন আগে হাওড়ার বালির বিধায়ক বৈশালী ডালমিয়াকে বহিষ্কার করেছে তৃণমূল। শো-কজ করা হয়েছে উত্তরপাড়ার তৃণমূল বিধায়ক প্রবীর ঘোষালকে, নদিয়া জেলার সহ-সভাপতি পার্থসারথি চট্টোপাধ্যায়কে তাঁর পদ থেকে সরানো হয়েছে। ফলে এই সব ব্যবস্থা নেওয়া থেকে বোঝা যাচ্ছে ভোটের আগে বেসুরো নেতাদের আর রেয়াত করবে না শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেস। আর সেটা আর একবার বুঝিয়ে দেওয়ার জন্যই ২৯ তারিখ বিধায়ক-সাংসদদের নিয়ে দলনেত্রী বৈঠকে বসছেন বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল।