মহামেডান – ৩ (ওমালাজা, তীর্থঙ্কর, চিডি)
মোহনবাগান- ২ (বেইতিয়া, সালভাদর)
সায়ন মজুমদার: আগস্টের পাঁচ তারিখ। ডুরান্ড কাপের প্রথম ম্যাচে মুখোমুখি হয়েছিল মোহনবাগান ও মহামেডান। সুব্রত ভট্টাচার্যের মহামেডান সেইদিন বিশ্রী ফুটবল খেলে ৩-০ গোলে হেরেছিল মোহনবাগানের কাছে। কিন্তু কলকাতা লিগে সেই মহামেডান যেন সায়েদ রমেনের কোচিংয়ে অন্য কোনও দল। তীর্থঙ্কর, চিডিদের সাহসী ফুটবল ও সবুজ মেরুনের চোখে চোখ রেখে লড়াই তিন পয়েন্ট এনে দিল সাদা কালো ব্রিগেডকে। সেই সঙ্গে ১৬ পয়েন্ট নিয়ে লিগের দুই নম্বরে উঠে এলো মহামেডান।
মিনি ডার্বিতে নিজের দলে একটিই পরিবর্তন করেছিলেন কিবু। ব্রিটোর বিরুদ্ধে এদিন প্রথম একাদশে জায়গা পান জেসুরাজ। একটা সময় ছিল যখন বড় ম্যাচের মতো এই মিনি ডার্বি ঘিরেও প্রবল উত্তেজনা থাকতো, মাঠ ভরাতেন অসংখ্য ফুটবল সমর্থক। কিন্তু সময়ের সঙ্গে সঙ্গে পুরনো গরিমা হারিয়েছে মহামেডান। তাও যেটুকু উন্মাদনা এই খেলাটা ঘিরে বাকি ছিল, এদিন যুবভারতীতে তার অনেকটাই ম্লান। নিরাপত্তার খাতিরে সিংহভাগ দর্শকাশন ফাঁকা রেখেই খেলা হল এই ম্যাচ। তবে এদিন যে ধরণের উত্তেজক ফুটবল খেলা হল, হলফ করে বলা যেতে পারে, ইস্টবেঙ্গল বনাম মোহনবাগান ম্যাচেও সেই উত্তেজনা ছিল না।
ম্যাচে সেই সময় ঠিক করে হয়তো নিজেদের আসনেও গুছিয়ে বসতে পারেন নি দর্শকরা। সেই সময় তীর্থঙ্করের একটি শট সুন্দর দক্ষতায় সেভ করেন দেবজিৎ। বদলে কর্নার পায় মহামেডান। তীর্থঙ্করের কর্নার মোহন বক্সে এসে পড়তেই পায়ের জঙ্গল থেকে আচমকা শটে গোল করে যান ওমালাজা। এর কিছুক্ষণ পরেই দশ মিনিটের মাথায় প্রায় ২৫ গজ দূর থেকে বাম পায়ের জোরালো শটে ব্যবধান দ্বিগুন করেন তীর্থঙ্কর। মাত্র দশ মিনিটের দুই গোলে পিছিয়ে পরে কিছুটা যেন হকচকিয়ে যায় মোহনবাগান। প্রাথমিক ধাক্কাটা সামলে উঠতে অবশ্য ম্যাচের রাশ নিজেদের হাতে নিতে শুরু করে সবুজ মেরুন। ২৫ মিনিটে সাদা কালো বক্সের বাইরে ফ্রিকিক পায় মোহনবাগান। আর সেখান থেকে দর্শনীয় শটে মহামেডান জালে বল জড়ান বেইতিয়া। এক গোল শোধ করার পর আরো আক্রমণের চাপ বাড়ায় কিবু ভিকুনার দল। ৩৫ মিনিটে প্রায় গোল করেও ফেলেছিলেন বেইতিয়া। কিন্তু তার জোরালো শট অসাধারণ দক্ষতায় সেভ করেন প্রিয়াম।
দ্বিতীয়ার্ধের শুরু থেকেই আক্রমণাত্মক ফুটবল খেলা শুরু করে মোহনবাগান। গোল পেতে মরিয়া কিবু জেসুরাজের বদলে শুভকে নামান। অবশ্য পাল্টা আক্রমণ করছিল মহামেডানও। একবার তীর্থঙ্কর ও একবার মুসার শট দক্ষতার সঙ্গে সেভ করেন দেবজিৎ। এরপর ৬২ মিনিটে ফের একবার জোরালো শট নেন তীর্থঙ্কর। দেবজিৎ তা সেভ করলেও ফিরতি বলকে ঠান্ডা মাথায় গোলে পাঠান চিডি। এরপরেই গঞ্জালেসকে তুলে নিয়ে সালভাদরকে নামান কিবু। আর তিনি নামার কিছুক্ষনের মধ্যেই ফের একটি গোল করে মোহনবাগান। ৭০ মিনিটে মহামেডান বক্সের বাইরে থেকে বেইতিয়ার বাঁকানো ফ্রিকিকে মাথা ছুঁইয়ে ব্যবধান কমান সালভা। ৭৮ মিনিটে ফের একবার গোলের কাছে পৌঁছে যায় সাদা কালো ব্রিগেড। চাংথের শট কোনওরকম বাঁচান দেবজিৎ। এরপর শেষে আক্রমণের ঝাঁজ বাড়ালেও ম্যাচে সমতায় ফিরতে পারেনি কিবু ভিকুনার দল।
অন্যদিকে, বারাসাতে ভবানীপুরকে ২-০ গোলে হারাল পিয়ারলেস। গোল করেন জিতেন মুর্মু ও এডমন্ড। এর ফলে ১৭ পয়েন্ট নিয়ে লীগ জয়ের আরও কাছে পৌঁছে গেল তারা।
মোহনবাগানের প্রথম একাদশ: দেবজিৎ, চুলোভা, সাইরাস, কিমকিমা, গুরজিন্দর, নাওরেম, সাহিল, ফ্রান গঞ্জালেস, জেসুরাজ, বেইতিয়া ও সুহের
মহামেডানের প্রথম একাদশ: প্রিয়ান্ত, সুজিত, প্রসেনজিৎ, ওমালাজা, সৈফুল, মুসা, ফিরোজ, তীর্থঙ্কর, সত্যম, চাংথে ও চিডি