মোহনবাগান- ৩
লাজং- ২
ডেস্ক: দু’দলেরই পাওয়ার কিছু ছিল না, ছিল না কিছু হারানোরও। এমন পরিস্থিতে দুই ধরনের খেলা হতে পারে। এক, গা গুলিয়ে দেওয়া বিরক্তিকর ফুটবল। দুই, চাপ না থাকার ফলে উপভোগ্য ফুটবল। এদিন পাহাড়ে দ্বিতীয়টাই এলো। বিদেশিহীন লাজং অবনমনে চলে যাওয়ার পর বুঝিয়ে দিয়ে গেল তাদের এই চলে যাওয়াটা ভারতীয় ফুটবলের পক্ষে খুব সুখকর দৃশ্য নয়। উল্টো দিকে স্পনসরহীন, লক্ষ্যহীন মোহনবাগান বোঝাল আজকের খেলাটা আগে খেললে আই লিগের ছবিটা অন্যও হতে পারতো। বর্ণহীন পরিবেশে একটা ঝকঝকে ফুটবল উপহার দিয়ে গেল এই দুই ক্লাব।
মোহনবাগানের কোনও চাপ ছিল না। ছয় নম্বর জায়গাটা পাকা হয়ে যাওয়ার ফলে সুপার কাপে সরাসরি খেলার ছাড়পত্র পেয়েই গিয়েছিল। তাই শুরু থেকেই টেনশনহীন ছিলেন সবুজ-মেরুন ফুটবলাররা। আশ্চর্যজনকভাবে বল ধরা, বল ছাড়ার ক্ষেত্রেও যথেষ্ট সাবলীল ছিল খালিদের ছেলেরা। সেই মতো চার মিনিটের মাথায় গোল পেয়ে যায় মোহনবাগান। পেনাল্টি থেকে মোহনবাগানের প্রথম গোল করেন ডিপান্ডা ডিকা। সাধারণত এই সব সময়ে অবনমনে চলেযাওয়া দল খেলা থেকে হারিয়ে যায়। কিন্তু এক্ষেত্রে তা হল না। নিজেদের মধ্যে বল দেওয়া নেওয়া করে খেলতে থাকে সুভাষ সিংরা। এই পাস এন্ড রানের পাল্লায় পড়ে কিছুটা থমকে যায় মোহনবাগান। শেষ ম্যাচে নিজেদের ছাপ রেখে যাওয়ার আকাঙ্ক্ষাটা ধরা পড়ে লাজং-এর খেলায়। প্রথমার্ধ্বেই সমতায় ফেরে লাজং। ৪৬ মিনিটের মাথায় পেনাল্টি পেয়ে যায় লাজং। পেনাল্টি থেকে গোল করতে ভুল করেননি বুয়াম। সমতায় ফেরার পর আক্রমণে ধার বাড়ায় পাহাড়ের দল। কিমকিমা, কিংসলেদের কেমন যেন অসহায় লাগছিল ওই সময়টায়। তারই ফল স্বরূপ ৫৩ মিনিটে দ্বিতীয় গোলটি করে যায় লাজং। এক্ষেত্রেও শঙ্কর রায়কে পরাস্ত করেন বুয়াম। কিন্তু আটকে রাখা যায়নি মোহনবাগানকে। সনি ম্যাজিক কাজ তার শুরু করে। ৭৮ মিনিটে ফ্রিকিক থেকে বিশ্বমানের গোল করেন সনি নর্ডে। যে গোল সাধারণত বিশ্বকাপের সময় দেখা যায়। হয়তো সনির ওই গোল দেখেই ঘাবড়ে যায় লাজং। ডিপান্ডা ডিকা, সনিরা তখন এককথায় দারাগিরি করতে থাকেন লাজং ডিফেন্সে। ৮৮ মিনিটে ব্রিটো মোহনবাগানের হয়ে তিন নম্বর গোলটি করেন। সেটিও যথেষ্ট ভালো মানের গোল।
গুরুত্বহীন এক ম্যাচকে বর্ণময় করে দিল মোহনবাগান এবং লাজং। এক দল চ্যাম্পিয়নশিপ থেকে ছিটকে গিয়েছে। আর এক দল আই লিগ থেকেই। হারিয়ে যাওয়া এই দুই দলই রাঙিয়ে দিয়ে গেল সন্ধ্যের শিলংকে।