ডেস্ক: শাসকদলে ভাঙন ধরানো বোধ হয় একেই বলে। একের পর এক ছোট খাটো নেতাদের বিজেপিতে শামিল করার পর একেবারে তৃণমূলের শেকড়ে আঘাত হানলেন বিজেপি নেতা মুকুল রায়। ভাটপাড়ার চারবারের বিধায়ক অর্জুন সিং-কে ভারতীয় জনতা পার্টিতে যোগ দেওয়ানোর পর তাঁকে ‘মহাভারত’-এর অর্জুনের সঙ্গে তুলনা করলেন তিনি। আত্মবিশ্বাসে ফুটতে থাকা পদ্ম শিবিরের হাত শক্ত করে সদ্য তৃণমূল ত্যাগী বিধায়ক বললেন, ‘মানি-মানি-মানি’ হয়ে গিয়েছে ‘ত্রিপল এম’ অর্থাৎ মা মাটি মানুষের সরকার।
গতকাল সন্ধেবেলাই ঝাড়খণ্ডের নাম করে কলকাতা বিমানবন্দর থেকে দিল্লিগামী ফ্লাইটে চেপে বসেন অর্জুন। এই খবর চাউর হওয়ার পরই একপ্রকার নিশ্চিত হয়ে যায়, বিজেপিতেই যোগ দিতে চলেছেন তিনি। যেটুকু সন্দেহ বাকি ছিল, তা মিলিয়ে যায় সকালে মুকুলের ঘরে তাঁকে পাওয়ার পর। আনুষ্ঠানিক যোগদান ছিল কেবল সময়ের অপেক্ষা। ঘড়ির কাঁটা একটা পার হতেই দিল্লির সদর দফতরে সাংবাদিক বৈঠক করে সরকারিভাবে সম্পন্ন হয় দলবদল পর্ব। অর্জুনের পাশে উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষক কৈলাস বিজয়বর্গীয় সহ মুকুল। অথচ এই মুকুলের সঙ্গে অর্জুনের তিক্ত সম্পর্ক একসময় ছিল সর্বজনবিদিত। যেখানে মুকুল, সেই এক ছাতার তলায় অর্জুন থাকবেন তা ছিল কল্পনার অতীত। কিন্তু রাজনীতির রঙ আর ঢং দুই-ই উপলব্ধি করা বড়ই কঠিন। যেখানে শত্রু বলে কিছুই হয় না।
অর্জুনকে দলে শামিল করিয়েই তাঁকে মহাভারতের অর্জুনের সঙ্গে তুলনা করেন মুকুল। বলেন, মহাভারতের অর্জুন ছিল জানেন তো? সেই অর্জুনই এখন বিজেপিতে। উনি ভাটপাড়ার চারবারের বিধায়ক। এর দ্বারাই প্রমাণিত, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের রাজনৈতিক ছায়ায় কেউই থাকতে চাইছেন না। ‘তৃণমূল কংগ্রেসের অনুপম হাজরা, সৌমিত্র খাঁ-ও যোগ দিয়ে ফেলেছেন। খগেন মুর্মু, দুলাল বরও যোগ দিয়েছেন। এটা তো সিনেমার শুধু ট্রেলারই চলছে। আসল সিনেমা তো এখনও বাকি আছে। অর্জুন আমার ভাই-এর মতো। এতে বিজেপির হাত আরও শক্ত হবে। আসন্ন লোকসভা নির্বাচনে বিজেপি প্রচুর ভোটে জয়ী হবে।’ উল্লেখ্য, ব্যারাকপুরে তৃণমূল কংগ্রেসের প্রার্থী হয়েছেন দীনেশ ত্রিবেদী। কিন্তু অর্জুনেরই নজর ছিল এই আসনটির উপর। বলাই বাহুল্য, এবার বিজেপির টিকিটে সেই আসন থেকেই তিনি প্রার্থী হতে চলেছেন বলে মনে করা হচ্ছে।