ডেস্ক: পঞ্চায়েত ভোটের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বিগ্ন কলকাতা হাইকোর্ট থেকে শুরু করে বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলি৷ সাধারণ মানুষও আতঙ্কে ভুগছে৷ প্রকাশ্য স্বীকার না করলেও, ঝামেলার আশঙ্কায় অনেকেই এবার পঞ্চায়েতে ভোটদান থেকে নিজেদের বিরত রাখতে চাইছেন৷ শনিবার পঞ্চায়েত ভোটের নিরাপত্তা নিয়ে প্রধান দশটি রাজনৈতিক দলের সঙ্গে যখন বৈঠক করছেন রাজ্য নির্বাচন কমিশনার, ঠিক তখনই রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে নিরাপত্তার বিষয়ে তৎপরতা দেখান হল৷ পঞ্চায়েত ভোটের নিরাপত্তায় ভিন রাজ্য থেকে বাহিনী চেয়ে চিঠি দিল নবান্ন। ৫টি রাজ্যের কাছে এই চিঠি পাঠানো হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। নবান্ন সূত্রে খবর, এই পাঁচটি রাজ্যের মধ্যে রয়েছে অসম, ওড়িশা, পঞ্জাব, তেলেঙ্গানা ও অন্ধ্রপ্রদেশ৷ এই রাজ্যগুলির প্রত্যেকের কাছে ৫ কোম্পানি বাহিনী চাওয়া হয়েছে চিঠিতে।
উল্লেখ্য, রমজান মাসের জন্য রাজ্যের প্রস্তাবে সায় দিয়ে আগামী ১৪ মে একদফায় পঞ্চায়েত ভোট করতে চলেছে নির্বাচন কমিশন। মনোনয়ন পর্বে রাজ্যের সাম্প্রতিক চিত্র ইতিমধ্যেই জোরাল আভাস দিয়েছে, এবার পঞ্চায়েত ভোট হবে রক্তক্ষয়ী৷ তাই শুরু থেকেই নির্বাচনের নিরাপত্তা নিয়ে সরব হয় হয়েছে বিরোধীরা। রাজ্য পুলিশে ভরসা না রেখে তাই, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের পক্ষ থেকে কেন্দ্রীয় বাহিনী আনার দাবি জানানো হয়েছে৷ কিন্তু রাজ্য সরকার আবার তাদের সিদ্ধান্তে অনড়৷ নবান্ন মনে করছে রাজ্য পুলিশ ও কলকাতা পুলিশের যে সশস্ত্র বাহিনী রয়েছে, তা নির্বিঘ্নে পঞ্চায়েত ভোট করানোর জন্য যথেষ্ট৷ কিন্তু অঙ্কের হিসেব অন্য কথা বলছে৷ রাজ্যের হাতে থাকা মোট পুলিসকর্মীর সংখ্যা ৫৮ হাজার। এরমধ্যে সশস্ত্র পুলিসকর্মীর সংখ্যা ৪৬ হাজার। অন্যদিকে, রাজ্যে মোট বুথের সংখ্যা ৫৮, ৪৬৭টি। বিরোধীরা ইতিমধ্যেই প্রশ্ন তুলেছে, ভোটের সময় যদি সব পুলিশকে কাজে লাগানো হয় তাহলে থানাগুলিতে তালা পড়বে৷
রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকেও বিষয়টি নিয়ে তাই জোর তৎপরতা শুরু হয়ে যায়৷ রাজ্য পুলিশের পাশাপাশি কলকাতা পুলিশ এবং কারারক্ষী বাহিনেদের ভোটের কাজে নিযুক্ত করবে নবান্ন৷ সেইসঙ্গে ভিন রাজ্য থেকে বাহিনী আনা হবে৷ প্রতি রাজ্য থেকে যদি ৫ কোম্পানি করে বাহিনী আসে, তাহলে মোট ২৫ কোম্পানি বাহিনী আসবে। ফলে রাজ্যের হাতে অতিরিক্ত ১৬ হাজার পুলিসকর্মী থাকবে। সেক্ষেত্রে স্পর্শকাতর থেকে অতি স্পর্শকাতর সব বুথেই সহজেই পর্যাপ্ত নিরাপত্তা দেওয়া সম্ভব হবে বলে মনে করছে নবান্ন। ইতিমধ্যেই স্পর্শকাতর এবং অতি স্পর্শকাতর বুথগুলিকে চিহ্নিত করণের কাজ চলছে৷