মহানগর ওয়েবডেস্ক: এক দিকে পাষণ্ডদের পক্ষ নিয়ে যখন একের পর এক যুক্তি সাজিয়ে ফাঁসির দড়ি ফাঁস থেকে দোষীদের ছাড়িয়ে আনছেন আইনজীবী এপি সিং, অন্যদিকে তখন যুক্তি সাজিয়ে দোষীদের ফাঁসি মঞ্চের আরও কাছে নিয়ে যাচ্ছেন সীমা কুশবাহা। দীর্ঘ ৭ বছর লড়াইয়ের পর শুক্রবার ভোর সাড়ে ৫ টায় অবশেষে স্বস্তি ও জয়ের সঙ্গে শেষ হয়েছে সেই লড়াই। অথচ কে এই সীমা কুশওয়াহা? যিনি দীর্ঘ বছর ধরে বিনা পারিশ্রমিকে লড়াই করে গিয়েছেন নির্ভয়াকে বিচার দিতে।
২০১২ সাল থেকে শুরু করে টানা ৭ বছর। অবশেষে নির্ভয়া দোষীদের ফাঁসির দড়িতে ঝোলানোর পর শুভেচ্ছাবার্তায় ভরে উঠেছেন সীমা কুশওয়াহা। অথচ একটা সময় আইনজীবী হওয়ার কোনও ইচ্ছাই ছিল না সীমার। ইচ্ছা ছিল, দেশের সবচেয়ে বড় দায়িত্বপূর্ণ চাকরি আইএএস অফিসার হওয়ার। জানা যায়, উত্তরপ্রদেশের বাসিন্দা এই সীমা কুশওয়াহা। ২০১২ সালে যখন নির্ভয়ার ঘটনা ঘটে তখন কোর্টে ট্রেনিং নিচ্ছেন তিনি। তখনই নির্ভয়ার পরিবারকে তিনি প্রতিশ্রুতি দেন, দোষীদের শাস্তি দিয়ে তবেই খান্ত হবেন তিনি। জানিয়েও দেন এই দীর্ঘ লড়াইটা তিনি লড়বেন বিনা পারিশ্রমিকে।
এক সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে সীমার দাবি, যদি তিনি এই মামলা ফার্স্টট্র্যাক কোর্টে আবেদন না করতেন তাহলে আজও ঝুলে রইত এই মামলা। পাশাপাশি তার আরও দাবি, তিনি এমন একটি জায়গা থেকে উঠে এসেছেন যেখানে মহিলাদের বড় একটা স্বাধীনতা নেই, তারপরও কার্যত লড়াই করে উকিল হয়েছেন তিনি। শুধু তাই নয়, নির্ভয়া মামলা তাঁর জীবনের আইনজীবী হিসাবে প্রথম কোনও মামলা, লড়াইটা যে বেশ দক্ষতার সঙ্গে লড়াই করেছেন তিনি, তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না। শুধু আদালত নয়, আদালতের বাইরেও নির্ভয়া পরিবারের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ ভাবে দেখা যায় তাঁকে। নির্ভয়া দোষীদের শাস্তির দাবিতে দেশজুড়ে চলা প্রতিবাদেও সামিল ছিলেন তিনি।
জানা গেছে, নির্ভয়া কাণ্ডে দোষীদের আইনজীবী যখন সব দিক থেকে পরাস্ত হওয়ার পর আন্তর্জাতিক আদালতে যাওয়ার জন্য প্রস্তুত হচ্ছিল, সেই সময়ে সরব হয়ে ওঠেন আইনজীবী সীমা। এই ঘটনাকে ভারতের সংবিধানে আঘাত করা হচ্ছে বলে সরব হয়ে ওঠেন তিনি। তাঁর চেষ্টাতেই আন্তর্জাতিক আদালতে যাওয়া থেকে বিরত থাকতে হয় এপি সিংকে। সবশেষে এদিন চার দোষী ফাঁসিকাঠে ঝোলার পর স্বস্তির শ্বাস ফেলেছেন সীমা কুশওয়াহা। ঘটনার পর সবার প্রথম তাঁকে ধন্যবাদ দিয়েছেন নির্ভয়ার মা আশা দেবী।