ডেস্ক: আদালতের গেরোয় আটকে রাজ্য পঞ্চায়েত নির্বাচন। গত কয়েকদিন ধরে পঞ্চায়েত নির্বাচন নিয়ে হিংসার জেরে আদালতে মামলা দায়ের করে বিজেপি, কংগ্রেস ও সিপিএম। সেই মামলার পরিপ্রেক্ষিতে অন্তর্বর্তিকালীন স্থগিতাদেশ জারি রয়েছে পঞ্চায়েত ভোট পক্রিয়ার উপর। এরপর মঙ্গলবার পঞ্চায়েত মামলার শুনানিতে হাইকোর্টের বিচারপতি সুব্রত তালুকদারের বেঞ্চ জানায়, আগামীকাল পর্যন্ত জারি থাকবে স্থগিতাদেশ। সব পক্ষের সমস্ত প্রমান, নথি দেখে এই বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে হাইকোর্ট।
এদিন আদালতে রাজ্যসরকারের পক্ষ থেকে আইনজীবী কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, ‘আদালতের সিদ্ধান্ত নির্বাচনী পক্রিয়াকে বিলম্বিত করছে। তাই স্থগিতাদেশ প্রত্যাহার করুন।’ তাঁর দাবি, নির্বাচনের দিনক্ষণ ঘোষণা হওয়ার পর সে বিষয়ে হস্তক্ষেপ করতে পারে না আদালত।’ নিজের বক্তব্যের সমর্থনে একাধিক মামলার উদাহরণ ও তার রায় তুলে ধরেন তিনি। এর পরিপ্রেক্ষিতে হাইকোর্টের বিচারপতি জানান, ‘ ১১ এপ্রিল সুপ্রিমকোর্টের নির্দেশ মেনে এই মামলায় হস্তক্ষেপ করেছে হাইকোর্ট।’ অন্যদিকে, বিরোধীদের এই মামলা যুক্তিহীন বলেও দাবি করেন কল্যাণবাবু। তিনি বলেন, ‘বিজেপির কোনও নতুন আর্জি নেই, শুধুই অভিযোগ বিরোধীরা মনোনয়ন দিতে পারেননি। আদালতে কোনও বক্তব্য নয়, সংখ্যা দিক বিরোধীরা।’ পঞ্চায়েত ভোটের পরিপ্রেক্ষিতে সিপিএমের মামলা ছিল, ‘নির্বাচন কমিশনকে অযোগ্য ঘোষণা করুক আদালত। তাঁদের দাবি নতুন কমিশনারের দায়িত্বে ভোটের নির্ঘণ্ট প্রকাশ করা হোক।’ সিপিএমের দায়ের করা এই মামলাকে কটাক্ষ করেন কল্যাণবাবু। সিপিএমের এই দাবিকে সম্পুর্ণ ভিত্তিহীন বলে দাবি করে নিজের বক্তব্যের সমর্থনে ২০০০ সালের আশোক কুমার বনাম কমিশনের মামলা তুলে আনেন তিনি।
উল্লেখ্য, সোমবারই পঞ্চায়েত নির্বাচনে বড় ধাক্কা খায় রাজ্য সরকার সহ নির্বাচন কমিশন। সিঙ্গেল বেঞ্চের স্থগিতাদেশের রায়কে চ্যলেঞ্জ করে রাজ্য ডিভিশন বেঞ্চের দ্বারস্থ হলেও, রাজ্যকে ফের সিঙ্গেল বেঞ্চেই ফিরে যাওয়ার নির্দেশ দেন বিচারপতি অরিন্দম মুখোপাধ্যায় এবং বিচারপতি বিশবনাথ সমাদ্দার। একই সঙ্গে নির্বাচন কমিশনকেও বিচারপতিদের সওয়ালের মুখে পড়তে হয়। শুনানি শেষে রাজ্য সরকারকে ফের সিঙ্গেল বেঞ্চে যাওয়ার পরামর্শ দেন বিচারপতিরা। একইসঙ্গে সোমবার বিচারপতি সুব্রত তালুকদারের বেঞ্চ জানায়, যতদিন না আদালতের তরফ থেকে পরবর্তী নির্দেশ দেওয়া হচ্ছে ততদিন পর্যন্ত ভোট পক্রিয়ার উপর অন্তর্বর্তিকালীন স্থগিতাদেশ জারি থাকবে। এরপর মঙ্গলবার সেই মামলার শুনানিতে বিচারপতি জানান, এই মামলার শুনানি এখনও চলবে। সেইসঙ্গে আগামীকাল পর্যন্ত পঞ্চায়েত ভোট পক্রিয়ায় স্থগিতাদেশ জারি রাখেন তিনি।