পিয়ারলেস- ১ (দীপেন্দু) রেনবো- ০
সায়ন মজুমদার: পিয়ারলেস বনাম রেনবো ম্যাচ। আর পাঁচদিন হলে এই ম্যাচ নিয়ে খুব একটা উৎসাহ দেখাতেন না বাংলার ফুটবলপ্রেমীরা। কিন্তু আজব ‘মাদারির খেল’ এই সিএফএল। দুই ছোট দলের এই ম্যাচ দেখতেই টিভি বা মোবাইলের পর্দায় চোখ রেখেছিলেন ইস্ট-মোহন সমর্থকরা। আজকের ম্যাচে জহর দাসের দল পয়েন্ট নষ্ট করলেই অ্যাডভানটেজ ইস্টবেঙ্গলের। অন্যদিকে, বড় ব্যবধানে জয় মানেই লিগ প্রায় পিয়ারলেসের হাতের মুঠোয়। এহেন গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে নার্ভ ধরে রেখে শেষ হাসি হেসে গেল পিয়ারলেস। দীপেন্দুর করা একমাত্র গোলে রেনবোকে হারাল জহর দাসের দল। একই সঙ্গে ১০ ম্যাচে ২০ পয়েন্ট নিয়ে লিগ শীর্ষে উঠে এল তাঁরা। ফলে আগামী ম্যাচে জর্জ টেলিগ্রাফকে হারাতে পারলেই ইতিহাস গড়বেন ক্রোমা, জীতেন মুর্মুরা।
এদিন খেতাবের আরও একটু কাছে পৌঁছে যাওয়ার জন্য জয় দরকার ছিল পিয়ারলেসের। অন্যদিকে, অবনমন বাঁচাতে তিন পয়েন্ট দরকার ছিল সৌমিক দের রেনবোরও। রেনবোর পাশাপাশি এই ম্যাচে পিয়ারলেসের হার চেয়েছিলেন ইস্টবেঙ্গলও। রেনবোকে সমর্থন করতে তাই বারাসাত স্টেডিয়াম পৌঁছে গিয়েছিলেন বেশ কিছু লাল-হলুদ সমর্থক। ক্রমাগত গ্যালারি থেকে সৌমিক দের দলের হয়ে গলা ফাটাচ্ছিলেন তারা। যদিও ম্যাচ শেষে হতাশ হয়েই ফিরতে হল তাঁদের।
ম্যাচের শুরু থেকে খেলায় মরিয়া ভাবের অভাব ছিল রেনবোর। শুরু থেকেই বারবার রেনবো ডিফেন্সে চাপ তৈরি করছিলেন ক্রোমা, জীতেন মুর্মুরা। সেই চাপের মুখে মাত্র ১০ মিনিটের মধ্যেই ভেঙে পরে রেনবো ডিফেন্স। বক্সের বাম প্রান্ত থেকে জোরালো শটে গোল করেন দীপেন্দু দোয়ারী। এরপর ১৬ মিনিটে ব্যবধান দ্বিগুণ করার সুযোগ পেয়ে গিয়েছিলেন ক্রোমা। দুর্ভাগ্যবশত তাঁর জোরালো শট ক্রসপিসে লেগে ফিরে আসে। অবশ্য প্রাথমিক জড়তা কাটিয়ে উঠে ধীরে ধীরে ম্যাচে ফেরে রেনবোও। ২৫ মিনিট নাগাদ রেনবো স্ট্রাইকার চিডির গোলার মতো শট বাঁচান পিয়ারলেস কিপার অরুপ। ৪১ মিনিটে আরও একটি সুবর্ণ সুযোগ পায় রেনবো। সুজয়ের কর্নার থেকে অনেকটা পিছন থেকে উঠে এসে হেড করেন সৌরভ। কিন্তু অল্পের জন্য তা লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়।
দ্বিতীয়ার্ধের শুরু থেকেই আক্রমণের চাপ বাড়ায় রেনবো। ৪৭ মিনিটে চিডির দুরন্ত শট বাজপাখির মতো ঝাঁপিয়ে সেভ করে পিয়ারলেস গোলরক্ষক। অন্যদিকে, দ্বিতীয়ার্ধে যেন কিছুটা রক্ষণের খোলসে চলে যায়। রেনবো খেলোয়াড়রা যখন আক্রমণে উঠছিলেন, তখন সাত থেকে আট জন পিয়ারলেস খেলোয়াড় নিচে নেমে আসছিলেন। তবে পাল্টা আক্রমণ চলাচ্ছিল জহর দাসের দলও। ৬৩ মিনিটে এরকমই এক আক্রমণ থেকে গোলের কাছে পৌঁছে যান ক্রোমা। কিন্তু তাঁর দুর্ভাগ্য প্রথমার্ধের মতো দ্বিতীয়ার্ধেও তাঁর শট বারে লাগে। দ্বিতীয়ার্ধে রেনবো অনেক বেশি আক্রমণাত্মক খেললেও তাঁদের আক্রমণে পরিকল্পনার অভাব ছিল। ফলে বিপক্ষের অ্যাটাকিং থার্ডে গিয়ে খেই হারিয়ে ফেলছিলেন নিউ ব্যারাকপুরের দলটির খেলোয়াড়রা। ফলে স্কোরবোর্ডে আর কোনও পরিবর্তন হয়নি।
পিয়ারলেসের প্রথম একাদশ: অরুপ, অভিনব, মনোতোষ, ভার্নে, ফুলচাঁদ, এডমন্ড, পঙ্কজ, অনিল, দীপেন্দু, জীতেন ও ক্রোমা
রেনবোর প্রথম একাদশ: অঙ্কুর, শুভঙ্কর, রিচার্ড, প্রদীপ, ছোট্টু, অভিজিৎ, সৌরভ, সুরজ, কাজিম, সুজয় ও চিডি