নিজস্ব প্রতিবেদক, রায়গঞ্জ: আদালত কর্মীরা সময় মতো না আসায় তাদেরকে অপমান করে ঘর থেকে বের করে দিলেন বিচারক৷ বিচারকের এই দুর্ব্যবহার মেনে নিতে না পেরেই ক্ষোভে ফেটে পড়লেন আদালতের বাকি কর্মীরা৷ নিজেকে বাঁচাতে পুলিশের স্মরণাপন্ন হলেন বিচারক৷ পুলিশ আদালত চত্ত্বরে পৌঁছতেই রণক্ষেত্রের চেহারা নিল উত্তর দিনাজপুর জেলা আদালত চত্ত্বর৷ ঘটনার সামাল দিতে গিয়ে আদালতের বিক্ষোভরত কর্মীদের সঙ্গে বচসায় জড়িয়ে পড়ে পুলিশবাহিনী৷ শুরু হয় ধস্তাধস্তি৷ আহত হন রায়গঞ্জ থানার এএসআই৷ তাকে মারধর করা হয় বলেও অভিযোগ৷ এমনকি বিক্ষোভকারীদেরও মারধর করেছে পুলিশ, আদালত কর্মীরা পরে সেই অভিযোগও তোলেন৷ ঘটনায় দুই আদালত কর্মী ও দুজন পুলিশ আহত হন বলে জানা গিয়েছে। আহতদের রায়গঞ্জ সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
আদালত সূত্রে জানা গিয়েছে, গত ২৬ ফেব্রুয়ারি উত্তর দিনাজপুর জেলা আদালতের বিচারকের দায়িত্বভার নেন উদয় কুমার। শনিবার সরকারি নির্দেশ অনুযায়ী সকাল ১০ টায় হাজির খাতা সংগ্রহ করে নিজের ঘরে নিয়ে যান তিনি। সকাল দশটায় হাজিরা খাতা নিয়ে নেওয়ায় বহু কর্মি এদিন হাজিরা খাতায় সই করতে পারেন নি। এরপরই রবিবার এরই প্রতিবাদে আদালতের কর্মীরা বিচারক উদয় কুমারের সঙ্গে দেখা করতে যান৷ তাদেরকে ঘরের ভেতর নানাভাবে অপমান করে ঘর থেকে বের করে দেন বিচারক, অভিযোগ। আদালত কর্মী সংগঠনের নেতাদের অপমানিত করায় ক্ষোভ চেপে রাখতে পারেননি কর্মীরা। জেলা বিচারকের ঘরের সামনেই বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন তারা।
আদালতের ভিতরে কর্মীরা বিক্ষোভ শুরু করলে বিচারক রায়গঞ্জ থানার পুলিশের শরনাপন্ন হন। পুলিশ আদালতে পৌঁছে কর্মিদের উত্তেজনার ছবি মোবাইল বন্দি করতে গেলেই পুলিশের সঙ্গে আদালত কর্মিদের ধস্তাধস্তি শুরু হয়। অভিযোগ,
আদালতের কর্মীরা এএসআই জয়ন্ত দাসের মোবাইলটি কেড়ে নেয়। জয়ন্তবাবুকে মাটিতে ফেলে মারধর করে বলেও অভিযোগ। পুলিশ আক্রান্ত হওয়ার পর রায়গঞ্জ থানায় খবর পৌঁছাতেই বিশাল পুলিশ বাহিনী ঘটনাস্থলে পৌঁছে আদালতের ভেতরেই আদালত কর্মীদের মারধর করে। পুলিশের মারে আহত হয়েছেন আনিক পাট্টাদার এবং শ্যামল দাস নামে দুই আদালত কর্মী। আহত পুলিশ এবং আদালত কর্মিদের চিকিৎসার জন্য রায়গঞ্জ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। আদালত চত্বরে ব্যাপক উত্তেজনা থাকায় কমব্যাক্ট ফোর্স সহ বিশাল পুলিশ বাহিনী আদালতে নামানো হয়। জেলা বিচারক উদয় কুমার এ বিষয়ে সাংবাদিকদের কিছু বলতে রাজি হননি।