নিজস্ব প্রতিনিধি: বিভিন্ন শহরের ফুটপাতে অপরিচ্ছন্ন পরিবেশে যে খাবার বিক্রি হয়, তার থেকে এতদিন অনেক সস্তায় খাবার পাওয়া যেত সংসদ ভবনে। এখানে একেবারে জলের দরে পাওয়া যেত বিরিয়ানি থেকে শুরু করে চিকেন চাঁপ। এতদিন ধরে অত্যন্ত সস্তায় সেই খাবার পেতেন সাংসদ-সহ সংসদ ভবনের কর্মী ও বিভিন্ন কারণে এখানে আসা অতিথিরা। সংসদ ভবনে মোট চারটি ক্যান্টিন চলছে। আর সেই চারটি ক্যান্টিনের পেছনে বছরে কয়েক কোটি টাকা ভর্তুকি দিতে হতো সরকারকে। বাইরের থেকে অন্তত ৮০ শতাংশ কম দামে এবং অত্যন্ত উচ্চ মানের খাবার পাওয়া যেত এখানে।
এখন বিভিন্ন ভাতা মিলিয়ে বর্তমানে একজন সাংসদ প্রায় দুই লক্ষ টাকার ওপরে আয় করেন। আবার সংসদে কাজ করেন যে কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মী, তাদের বেতনও লক্ষাধিক বা তার কাছাকাছি অংকের টাকা। এই বিপুল টাকা যারা আয় করেন, তাদের জন্য কোন যুক্তিতে সরকারের টাকায় এই ভর্তুকি দেওয়া ক্যান্টিন চলবে, তা নিয়ে বিভিন্ন মহলে উঠতে থাকে প্রশ্ন। অবশেষে কেন্দ্রের বিজেপি সরকার তুলে দিল সংসদে চলতে থাকা ক্যান্টিনের ভর্তুকি। সস্তায় জলের দরে খাওয়ার দিন শেষ।
আজ বুধবার থেকে চালু হল নতুন দাম। কিন্তু তারপরও খাবারের যে দাম ধার্য করা হয়েছে, তাতেও থেকে যাচ্ছে প্রশ্ন। এখন থেকে এক প্লেট চিকেন বিরিয়ানির দাম পড়বে ১০০ টাকা, এক প্লেট চিকেন কারির দাম ৭৫ টাকা। মোটামুটি মানের কোনও রেস্টুরেন্টে এই খাবারের দাম তার থেকে বেশি। যাই হোক এতদিন জলের দরে যে খাবার পাওয়া যেত, এখন থেকে আর তা পাবেন না সাংসদরা।
উল্লেখ্য, ২০১৯ সালের কেন্দ্র প্রস্তাব রাখে সংসদে খাবারের দাম বাড়ানো হবে বলে। কিন্তু ওই সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করেছিলেন বেশ কিছু সাংসদ। এতদিন পর অবশেষে ভর্তুকি উঠে গেল সংসদের ক্যান্টিন থেকে।
প্রচুর সুযোগ-সুবিধাসহ বিপুল টাকা মাইনে পাওয়া সাংসদ ও সংসদের কর্মীদের জন্য এতদিন চলে আসা এই সস্তার ক্যান্টিন নিয়ে বিভিন্ন মহল থেকে একাধিক বার ওঠে নানা প্রশ্ন। এই দেশে বহু মানুষ এখনও ঠিকমতো খেতে পায় না। সেই দেশে সরকারি টাকায় জনপ্রনিধিদের জন্য কী করে এই ক্যান্টিন চলত, এতদিন বহু মানুষের এটাই ছিল প্রশ্ন।