মহানগর ওয়েবডেস্ক: একের পর এক সব বন্ধ হওয়ার পথে। সিনেমা হল থেকে শুরু করে রাষ্ট্রপতি ভবন, সব বন্ধ! সবকিছু স্তব্ধ করে দেওয়ার কারিগর নোভেল করোনাভাইরাস। চিনা এই ভাইরাস একে একে দখল করেছে বিশ্বের তাবড় দেশ। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ইতিমধ্যেই একে মহামারীর আখ্যা দিয়ে দিয়েছে। এরপর যেন আরও আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে পড়েছে মানুষ। পূর্বপরিকল্পিত বিভিন্ন কাজ স্থগিত রেখে দিচ্ছে সব দেশ। একইপথে চলছে ভারতও। করোনা আতঙ্কে ইতিমধ্যেই রাষ্ট্রপতি ভবন সাধারণের জন্য বন্ধ করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। স্পষ্ট জানানো হয়েছে, পরবর্তী নির্দেশ না আসা পর্যন্ত এই সিদ্ধান্তই বহাল থাকবে।
তবে শুধু রাষ্ট্রপতি ভবন নয়, একই রকম নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে সংসদ ভবনে প্রবেশ নিয়েও। তবে সংসদের অধিবেশন বন্ধ করে দেওয়ার মতো কোনও সিদ্ধান্ত এখনও পর্যন্ত নেওয়া হয়নি। এদিকে, নয়া দিল্লিতে নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত স্কুল-কলেজ ও সিনেমা হলও বন্ধ রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে সরকারের পক্ষ থেকে। মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল জানিয়েছেন, ৩১ মার্চ পর্যন্ত শহরের সমস্ত সিনেমা হল বন্ধ রাখা হচ্ছে। একইসঙ্গে ঘোষণা করা হয়েছে, প্রত্যেক স্কুল-কলেজ যে গুলির পরীক্ষার কাজ শেষ হয়ে গিয়েছে, সেগুলিও এই মাসের শেষ পর্যন্ত বন্ধ থাকবে। পাশাপাশি, দিল্লিতেও করোনাভাইরাসকে মহামারী হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে। উল্লেখ্য, ভারতে কেরলের পর সবচেয়ে বেশি আক্রান্তের সংখ্যা ধরা পড়েছিল এই দিল্লিতেই। এখনও পরিস্থিতি খুব একটা সুখকর নয়। সেই প্রেক্ষিতে কেজরিওয়াল জানিয়েছেন, দিল্লি সরকার বিভিন্ন হাসপাতালে ৫০০-রও ওপর বেড সংযোগে প্রস্তুত।
#CoronaVirus declared as an epidemic in Delhi
● Cinema halls in Delhi to remain shut till March 31.
● All schools and colleges in Delhi except in those where exams are on to remain closed till March 31.
● Disinfecting all public places, Govt & Pvt offices made compulsory. pic.twitter.com/LDFspoDowb
— AAP (@AamAadmiParty) March 12, 2020
গতকাল বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (হু) COVID-19-কে ‘প্যান্ডেমিক’ তকমা দেয়। কোনও রোগ সারা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়লে তাকে ‘প্যান্ডেমিক’ বলা হয়৷ কোনও রোগ ছড়িয়ে পড়লে, তিনটি পর্যায়ে তাকে ভাগ করে হু৷ প্রথমে আউটব্রেক, অর্থাত্ রোগটি ছড়াচ্ছে৷ এপিডেমিক, অর্থাত্ মহামারী৷ এপিডেমিক কোনও নির্দিষ্ট অঞ্চ বা দেশেও হতে পারে৷ কিন্তু যখন তামাম দুনিয়ায় ছড়িয়ে যায় সেই রোগ, তখন তা প্যান্ডেমিক অর্থাত্ আন্তর্জাতিক মহামারী৷
এ বিষয়ে চিন্তা প্রকাশ করে ভারতের বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর বলেছেন, করোনাভাইরাসের এইভাবে ছড়িয়ে পড়া প্রবল চিন্তার ব্যাপার। এই পরিস্থিতিকে ব্যতিক্রমী বলে তিনি বলেন, ব্যতিক্রমী পরিস্থিতির জন্য ব্যতিক্রমী পদক্ষেপ নিতে হবে। সেই পরিপ্রেক্ষিতে তিনি জনসাধারণকে ভ্রমণ থেকে বিরত থাকতে অনুরোধ করেছেন। তাঁর কথায়, এই সময় বিদেশ ভ্রমণ সবচেয়ে বেশি ভয়াবহ পরিস্থিতি তৈরি করতে পারে, তাই ভ্রমণ এই মুহূর্তে না করাই শ্রেয়। তিনি আরও বলেন, করোনাভাইরাস যাতে আরও ছড়িয়ে না পড়ে সেই জন্য সরকারি এবং কূটনীতিবিদ ছাড়া সব ক্ষেত্রে ভিসা বাতিল করা হয়েছে। আগামী ১৫ এপ্রিল পর্যন্ত ভারতের সমস্ত ট্যুরিস্ট ভিসা বাতিল করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। একইসঙ্গে চিন, কোরিয়া, ইরান, স্পেন, ফ্রান্স সহ বিভিন্ন দেশের পর্যটকদের পর্যবেক্ষণে রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।