ডেস্ক: চিরকালই বামেদের গড় হিসাবে পরিচিত ত্রিপুরায় নিভে গিয়েছে টিমটিম করে জ্বলতে থাকা সিপিএমের প্রদীপ। বামপন্থী দলের এই পরিণতি দেখে আক্ষেপ করলেন একদা সিপিএম নেতা রেজ্জাক মোল্লা। ত্রিপুরায় বামেদের ভরাডুবির পর রেজ্জাক বলেন, ”দলটার ভবিষ্যৎ একেবারেই ভাল না। এই দল পুঁজিবাদের বিরুদ্ধে কোনও লড়াই করে না। একেবারে সংসদীয় ভোট কেন্দ্রীক পার্টি। সেই সময় আমার কথা শুনলে এই হাল হতো না।”
বাংলায় সিপিএম ক্ষমতায় থাকার সময়ই শাসকদলের বিরুদ্ধে একাধিক বার সরব হয়েছিলেন রেজ্জাক। এরপর তৃণমূল কংগ্রেসে যোগ দিয়ে বহুবার বামপন্থী নেতাদের তুলোধোনা করেছেন তিনি। এদিন নিজের প্রাক্তন দলের ফলাফল দেখে রেজ্জাক বলেন, ”সংসদীয় ভোট কেন্দ্রীক পার্টি হওয়ার ফলে যা ফলাফল হওয়ার কথা তাই হচ্ছে। সাইন বোর্ডের দরকার নেই। লাভটা কী আছে। ওদের সারা ভারতেই আর কোনও জায়গা রইল না।” তিনি আরও বলেন ”সংকট হবে সেটা অনেকদিন ধরেই ওরা বুঝতে পারছিল। কিন্তু স্বীকার করছিল না। আমি সব কথা বলিষ্ঠতার সঙ্গে বলেছিলাম। মুখ খুলেছিলাম। এরা পাত্তা দেয়নি। পাত্তা দিলে তো আর এই অবস্থা হতো না।”
উল্লেখ্য, দলবিরোধী মন্তব্য করার জন্য তৎকালীন সিপিএম সরকারের থেকেও হুঁশিয়ারি পেয়েছিলেন রেজ্জাক। তাঁকে একাধিক বার সতর্কও করা হয়েছিল। চিরকালই নিজের একরোখা স্বভাবের জন্য খ্যাত রেজ্জাক অবশ্য তখনও নিজের অবস্থানেই অনড় ছিলেন। সিপিএম ছাড়ার সময়ই দলের ভবিষ্যৎ সম্পর্কে আশঙ্কা প্রকাশ করেছিলেন তিনি। ত্রিপুরায় বিজেপির পরিবর্তনের ডাকে মানুষের সাড়া দেওয়া রেজ্জাকের সেই আশঙ্কাকেই বাস্তবে পরিণত করছে। শিবরাত্রির সলতের মতো কেরলে সিপিএম জ্বলে থাকলেও সেখানে প্রত্যেক পাঁচ বছর অন্তর সরকার পরিবর্তনের ট্রেন্ড এখনও জারি রয়েছে। ফলে ত্রিপুরা হার যে সিপিএমের কফিনে অনেকটা শেষ পেরেক পোঁতার কাজ করেছে, তা বলার বাকি রাখে না।