ডেস্ক: মহারাজকে খুঁজে পেতে নাওয়াখাওয়া ভুলে দিনরাত এক করে ফেলছেন বনদপ্তরের আধিকারিকেরা। আর এদিকে মহারাজ বহাল তবিয়তে ঘুরে বেড়াচ্ছেন জঙ্গলমহলের অন্দরে। কখনো তার চরণ চিহ্নের দর্শন মিলছে গড়বেতার জঙ্গলে তো কখনও সিমলিপালের জঙ্গলে। কিন্তু শুধু ওইটুকুই। কারণ সশরীরে তার দেখা এখনও কেউ পায়নি। তিনি নিজে নতুন করে কোথাও ক্যামেরাবন্দিও হননি। অগ্যতা হাপিত্যেশ করে বসে সব করছে অপেক্ষা কবে মিলবে মহারাজার দরশন।
মহারাজা মানে বাঘমামা, যিনি না জানি কোথা থেকে এসে ঘুরে বেড়াচ্ছেন এ রাজ্যের জঙ্গলমহলের আনাচেকানাচে। লালগড়ের জঙ্গলে ক্যামেরাবন্দী বাঘ প্রায় একসপ্তাহ ধরে ঘুরেবেড়াচ্ছে পশ্চিম মেদিনীপুর, বাঁকুড়া, ঝাড়গ্রাম জেলার জঙ্গলে। মুখ্যমন্ত্রী ইতিমধ্যেই বাঘের সন্ধানে ড্রোন নামাবার নির্দেশ দিয়েছেন বনদপ্তরের আধিকারিকদের। সেটা করাও হয়েছে। তবুও অধরা বাঘমামা। রবিবার সকালে তার পায়ের ছাপ পাওয়া গেল বাঁকুড়া জেলার সিমলিপালের জঙ্গলে। তার জেরে সিমলিপাল জুড়ে যেমন আতঙ্কের চোরাস্রোত নেমে এসেছে তেমনই ঘুম ছুটেছে জেলার বনদপ্তরের আধিকারিকদেরও। সেই খবরের রেশ কাটার আগেই খবর এল পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা থেকে। গড়বেতার গোয়ালতোড়ের জঙ্গল লাগোয়া জিরাপাড়া গ্রামে মিলেছে মহারাজের পায়ের ছাপ। যদিও এখনও পর্যন্ত বাঘের দেখা মেলেনি। তবে তিনি যে জঙ্গলে রয়েছেন তা বেশ বোঝা যাচ্ছে জঙ্গলে নেমে আসা এক অদ্ভুত নিরাবতায়।
বনদপ্তরের আধিকারিকেরা জানিয়েচ্ছেন, গড়বেতা আর সিমলিপালের অবস্থান পাশাপাশি। জেলা আলাদা হলেও বাঘের কাছে সেটা কোন বাধা নয়। সে তার মত ঘুরেবেড়াচ্ছে জঙ্গলের অন্দরে। আর বাঘের পছন্দ ঘন বন যা গড়বেতা আর সিমলিপাল এলাকায় রয়েছে। আবার মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে ড্রোন নামানো হলেও ঘন জঙ্গলে তা বাঘমামাকে খুঁজতে পারচ্ছে না। কারণ হালকা জঙ্গলে ড্রোন ছবি তুলতে সক্ষম হলেও ঘন বনে সে বাঘের কোন ছবিই তুলতে পারছে না। তাই বাঘের অবস্থান ও তার গতিবিধিও বোঝা যাচ্ছে না। তবে বনদপ্তরের আধিকারিকেরা এটা মানচ্ছেন যে বাঘের ভয়ে জঙ্গলে অবৈধ ভাবে ঢোকা কাঠকারবারিদের কাজকর্মে এখন কিছুটা হলেও লাগাম পড়েছে। এমনকি জঙ্গল লাগোয়া গ্রামগুলিতেও মানুষজনের জীবনধারাতেও বদল এসেছে। যারা নিত্যদিন শৌচকর্মের জন্য জঙ্গলে যেতেন তারা এখন ঠেলায় পড়ে বাধ্য হচ্ছেন সরকার থেকে বাড়িতে তৈরি করে দেওয়া শৌচালয় ব্যবহার করতে।