নিজস্ব প্রতিবেদক, পূর্ব মেদিনীপুর: ২৫ ফেব্রুয়ারি মেচেদায় লোকাল ট্রেনের ভেতর ট্রলি ব্যাগে বন্দি ব্যবসায়ীর দেহ উদ্ধার হয়েছিল। তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পারে হোটেল লিজ নিতে আসা ব্যবসায়ী শেখ হাসানের টাকা হাতাতেই দালালেরা খুন করে ব্যক্তিকে। মৃত ব্যবসায়ীর সেই ৬ লক্ষ টাকা উদ্ধার করল জিআরপি। ঘটনায় ধৃত তিন অভিযুক্তকে নিজেদের হেফাজতে নিয়ে চলছে তদন্ত। ব্যবসায়ী খুনের ঘটনায় আরও কেউ জড়িত থাকতে পারে বলে অনুমান জিআরপির।
ট্রলি ব্যাগের মধ্যে ব্যবসায়ীর দেহ উদ্ধারের ঘটনায় পাঁশকুড়া জিআরপি ইতিমধ্যে তিনজনকে গ্রেফতার করেছে। ধৃতরা তহিজুদ্দিন শেখ ওরফে রাজু হালদার, দুর্গাশঙ্কর সেনাপতি ওরফে ননী ও গৌতম জানা। প্রত্যেকেই রয়েছে পুলিশ হেফাজতে। ধৃতদের জেরা করে পুলিশ জানতে পারে, মূলত টাকার জন্যই দালাল রাজু খুন করে হাসানকে। ২৪ তারিখ নিউ দিঘায় হোটেল লিজের বাকি ৬ লক্ষ টাকা নিয়ে কলকাতা থেকে বাসে চেপে হাসান রওনা হন দিঘার উদ্দেশ্যে। রাজুর ফোন পেয়ে হাসান রামনগরে বাস থেকে নেমে যান। এরপর একটি ভাড়া বাড়িতে রাজু হাসানকে নিয়ে গিয়ে সকাল ৯ টা থেকে ১১ টার মধ্যে খুন করা হয় বলে দাবি পুলিশের।
রাজুকে জিজ্ঞাসাবাদ করে খড়্গপুর জিআরপির একটি দল হানা দেয় দক্ষিণ চব্বিশ পরগনার মথুরাপুরে রাজুর বাড়িতে। রাজুর বাড়ি থেকে উদ্ধার করা হয় নগদ ৬ লক্ষ টাকা। জিআরপির দাবি, রামনগরে এক বান্ধবীর সঙ্গে ভাড়া বাড়িতে থাকত রাজু। রাজু ওই বান্ধবীর ওড়না দিয়ে হাসানকে শ্বাসরোধ করে খুন করে। যদিও খুনের দিন ধৃতের বান্ধবী রামনগরে ছিল না বলে জানিয়েছে পুলিশ। জানা গিয়েছে, রাজুর বান্ধবীর বাড়ি দক্ষিণ চব্বিশ পরগনায়। তাঁকেও একপ্রস্থ জিজ্ঞাসাবাদ করেছে তদন্তকারীরা। এদিন পাঁশকুড়া জিআরপি থানায় সাংবাদিক বৈঠকে খড়্গপুর জিআরপি-র পুলিশ সুপার অওধেশ পাঠক বলেন, ধৃতদের নিয়ে ঘটনার পুনর্নির্মাণ করা হয়েছে। শ্বাসরোধ করার পর যে ভারী জিনিসটি দিয়ে হাসানের মুখে আঘাত করা হয়েছিল সেটি ও রক্ত মোছার কাজে ব্যবহৃত তোয়ালাটি উদ্ধার করা হয়েছে। রাজুর সঙ্গে ষড়যন্ত্রে আর কেউ আছে কিনা তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
এদিকে, ৮ মার্চ সোমবার নয়নজুলি এলাকায় স্থানীয় এক ব্যক্তি রাস্তার পাশে দাঁড়িয়ে প্রস্রাব করার সময় একটি ট্রলি ব্যাগ পড়ে থাকতে দেখতে পান। এরপর তিনি এলাকাবাসীদের খবর দেন। খবর দেওয়া হয় স্থানীয় থানায়। পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে মৃতদেহটি উদ্ধার করে। দেহ ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছিল।ব্যাগ থেকে একটি পরিচয়পত্র উদ্ধার করা হয়েছে। সূত্রের খবর, কীসের পরিচয়পত্র তা জানা যায়নি। মনে করা হচ্ছে কোনও কোম্পানির পরিচয়পত্র। তবে রক্তে ভিজে সেই কার্ড পুরোপুরি নষ্ট হয়ে গিয়েছে। অনেক কষ্ট করে শুধুমাত্র তরুণীর নাম পড়তে পারা সম্ভব হয়েছে। এই সূত্র ধরেই তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। নাম জানার পর মৃত তরুণীর পরিচয় জানার চেষ্টা করা হচ্ছে। তদন্ত করে দেখা হচ্ছে কেন খুন, খুনের পেছনে কে বা কারা জড়িত।