মহানগর ওয়েবডেস্ক: নেতৃত্বের অভাবে একেই জর্জরিত দেশের সবচেয়ে প্রাচীন রাজনৈতিক দল জাতীয় কংগ্রেস। এর মধ্যে জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়া দল ছেড়ে দিয়ে বিপদ বাড়িয়েছেন। কিন্তু আসল বিপদ এখনও ঢুকে রয়েছে কংগ্রেসের মধ্যেই। তা হল নব্য ও আদির দ্বন্দ্ব। কংগ্রেসে সেসব পাকা চুলের নেতা রয়েছেন তারা কিছুতেই নবাগতদের জায়গা ছাড়ছে নারাজ। সেই দ্বন্দ্ব দীর্ঘদিন ধরেই চলছে। কিন্তু সিন্ধিয়া পরিবারের রাজপুত্র দল ছেড়ে বেরিয়ে আসায় তা জনসমক্ষে প্রকট হয়েছে। ফলে যে যুব নেতারা এখনও কংগ্রেসে টিকে রয়েছেন, তাদের ধরে রাখাই রাহুল-সনিয়াদের সব থেকে বড় চ্যালেঞ্জ এই মুহূর্তে। আরেকটু খোলসা করে বলা যায়, সিন্ধিয়া দল ছাড়ার পর সবথেকে বেশি যাঁকে নিয়ে কথা হচ্ছে, অর্থাৎ শচীন পাইলটকে আটকে রাখাই এবার কংগ্রেসের পাখির চোখ।
এক বছরের বেশি সময় ধরেই দলে সাইড লাইনে চলে গিয়েছিলেন জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়া। মুখ্যমন্ত্রীর আসন না পেয়ে যে তাঁর গোঁসা হয়েছিল, তা আরও স্পষ্ট হয়। এছাড়াও কংগ্রেসের পুরনো আমলের নেতাদের ও নতুনদের মধ্যে যে দেওয়াল উঠে গিয়েছে, তা দিনের আলোর মতো পরিষ্কার হয়ে যায়। একদিকে দিগ্বিজয় সিং, অশোক গেহলট, অধীর চৌধুরীর মতো নেতারা যখন সিন্ধিয়াকে তুলোধনা করেছেন, তখন রাজস্থানের উপমুখ্যমন্ত্রী শচীন পাইলট অনেকটাই নরম অবস্থান নিয়েছেন। জ্যোতিরাদিত্যকে পুরনো কংগ্রেস নেতারা বিশ্বাসঘাতক এবং স্বার্থান্বেষী বলে আখ্যা দিয়েছেন। কিন্তু পাইলট কিছুটা সমবেদনার সুরে দলের ভুলই খুঁজেছেন এই ইস্তফার কারণ হিসেবে।
Unfortunate to see @JM_Scindia parting ways with @INCIndia. I wish things could have been resolved collaboratively within the party.
— Sachin Pilot (@SachinPilot) March 11, 2020
সিন্ধিয়ার দলত্যাগ নিয়ে একে একে প্রত্যেকেই নিজেদের প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন। তবে সবার চোখ যার দিকে, সেই শচীন পাইলট মুখ খোলেন সবার শেষ। নিজের দল বা সিন্ধিয়া, কারোরই সমালোচনার পথে না হেঁটে কারণ অনুসন্ধানের পক্ষে সওয়াল করেছেন তিনি। টুইটারে শচীন লেখেন, ‘কংগ্রেসের থেকে জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়ার আলাদা হওয়া দুর্ভাগ্যজনক। সমস্যাগুলো দলের ভিতরে আলোচনার মাধ্যমে সমাধান করা গেলে ভালো হত।’ বস্তুত, উপমুখ্যমন্ত্রী শচীন পাইলটের সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী অশোক গেহলটের বনিবনাও যে বহুদিন ধরেই হচ্ছে না তাও রাজনৈতিক মহলে সর্বজনবিদিত। ফলে শচীন পাইলটও সিন্ধিয়ার পথ ধরবেন কিনা তা নিয়ে জল্পনা রীতিমতো তুঙ্গে রয়েছে। সনিয়া গান্ধী অবশ্য আগে থেকেই অশোক গেহলটকে ডেকে পরিস্থিতি বুঝে নেওয়ার চেষ্টা করেছেন। তবে কংগ্রেস যদি আদি-নব্যের দ্বন্দ্ব না মেটাতে পারে তবে শচীন পাইলট দল ছাড়লেও অবাক হওয়ার কিছুই থাকবে না।