ডেস্ক: মন্ত্রীত্ব গিয়েছে আগেই, মেয়র পদটাও গেল বৃহস্পতিবার, স্ত্রী রত্নাও দেখে নেওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন একদা মহানগরের মহানাগরিককে। মুহূর্তের ‘কাল বৈশাখী’ ঝড়ে সব চুরমার হয়ে গেলেও, ভাঙবেন তবু মচকাবেন না শোভন। বরং ইস্তফা পত্র জমা দেওয়ার পর সাংবাদিকদের সামনে বক্তব্য রাখতে গিয়ে, বৈশাখীর প্রতি তাঁর আনুগত্য ও ভালোবাসা ঠিক কতখানি তা বুঝিয়ে দিলেন স্পষ্ট করে। জানালেন, ‘বৈশাখী আমার শুভানুধ্যায়ী। সবকিছু চলে গেলেও, পাশে বৈশাখী আছে বেইমানি আমি করব না।’
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে মেয়র পদ থেকে ইস্তফা দেওয়ার পর মনে করা হচ্ছিল রাজনীতি থেকেও পুরপুরি বিশ্রামে চলে যাচ্ছেন শোভন। এবিষয়ে বলতে গিয়ে শোভন বলেন, ‘মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ এসেছিল তাই ফলেই ইস্তফা দিয়েছি আমি। দলকে কোনও ভাবেই বিড়ম্বনায় ফেলব না আমি। উনি যদি চান সেক্ষেত্রে ১৩১ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর পদ থেকেও ইস্তফা দিতে রাজি আমি।’ পাশাপাশি তৃণমূল থেকে যে তিনি এখনই সরছেন না সেটাও স্পষ্ট করে দিলেন তিনি। সঙ্গে এটাও জানিয়ে রাখেন, ‘কেন আমাকে মেয়র পদ থেকে পদত্যাগ করতে বলা হল তা জানি না। তবে আমার জীবনে যা হয়েছে তা যেন কোনও শত্রুর জীবনেও না আসে।’ পাশাপাশি কলকাতার নতুন মেয়র হিরহাদ হাকিম সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘শহর পরিচালনায় আমার তরফ থেকে কোনও রকম কোনও শিথিলতা ছিল না। তবে যারা নতুন দায়িত্বে এলেন তাঁদের আমার তরফ থেকে সুভেচ্ছা রইল। নতুন মেয়রকে সব ধরনের সহযোগিতা করব। অন্যদিকে, তাঁর বান্ধবী বৈশাখীর বিরুদ্ধে যে সমস্ত অভিযোগ তোলা হয়েছে তার পুরোটাই মিথ্যা বলে দাবী করেছেন তিনি। সঙ্গে এটাও জানান, ‘দুর্নীতি মামলার তদন্তে নেমে ইডি যখন জিজ্ঞাসাবাদ করছিল রত্না দেবীকে সেই মুহূর্তে বৈশাখীর শরণাপন্ন হয়েছিলেন রত্না। আর এখন তা অস্বীকার করছেন।’
উল্লেখ্য, পারিবারিক বিড়ম্বনায় জড়িয়ে অনেক আগেই মমতার বিষ নজরে পড়েছিলেন শোভন চট্টোপাধ্যায়। বারে বারে তাকে শোধরানোর সুযোগ দেওয়া হলেও কোনও পরিবর্তন ঘটেনি শোভনের। অবশেষে মঙ্গলবার বিধানসভার স্পিকারের ঘরে ডেকে শোভনের বিরুদ্ধে উস্মা প্রকাশ করেন মমতা। এরপরই একে একে মন্ত্রীসভার সমস্ত পদ থেকে ইস্তফা দেন শোভন। পাশাপাশি। বৃহস্পতিবার মেয়র পদ থেকেও ইস্তফা দিয়ে দিয়েছেন শোভন চট্টোপাধ্যায়।