নিজস্ব প্রতিনিধি: দলের জন্মলগ্ন থেকে না হলেও প্রায় প্রথম থেকেই তিনি তৃণমূলের সঙ্গে ছিলেন। প্রায় দুই দশকের সেই যাত্রা মাসখানেক আগে ছিন্ন হয়েছে। তৃণমূল ছেড়ে গেরুয়া শিবিরে নাম লিখিয়েছেন পূর্ব মেদিনীপুর তথা রাজ্যের অন্যতম হেভিওয়েট নেতা শুভেন্দু অধিকারী। কেন তিনি তৃণমূল দল ছেড়েছেন- এর আগে একাধিকবার তার কারণ ব্যাখ্যা করেছেন।
আজ আবার নন্দীগ্রামের সভা থেকে সেই কারণ ব্যাখ্যা করলেন শুভেন্দু অধিকারী। তিনি বলেন, ‘আমার তৃণমূল ছাড়ার কারণ দীর্ঘদিন ধরে এই দলে অপমানিত হয়েছি। দেখেছি, সমস্ত নেতা-মন্ত্রী ল্যাম্পপোস্ট। দলে একটি মাত্র পোস্ট। আমার মেরুদণ্ড সোজা-শক্ত। তাই এটা আর মানতে পারছিলাম না। যখন দেখলাম, তৃণমূল কোম্পানি হয়ে গেল, তখন আর তার কর্মচারী হতে রাজি হলাম না। তাই তৃণমূল ছেড়ে বিশ্বের বৃহত্তম রাজনৈতিক দল বিজেপির খাতায় নাম লেখালাম।‘
এদিন নন্দীগ্রাম থেকে তাঁর দলত্যাগের কারণ জানানোর পাশাপাশি নিজের পুরনো দল তৃণমূলকে একযোগে নিশানা করেন তিনি। একই সঙ্গে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কেও লক্ষ্য করে কঠোর আক্রমণ করেন। চলতে থাকা ‘জয় শ্রীরাম’-কাণ্ডের জের নিয়ে শুভেন্দু অধিকারী বলেন, ‘জয় শ্রীরাম-এর মতো পবিত্র শব্দ হয় না। মুখ্যমন্ত্রী জয় শ্রীরাম শুনে বলছেন, আমাকে অপমান করা হয়েছে। রামরাজ্য মানে সবাই ঠিকঠাক খেতে পারবে। কৃষকদের অধিকার প্রতিষ্ঠিত হবে। মুখ্যমন্ত্রী জয় শ্রীরাম বললে রেগে যাচ্ছেন। আর তাঁর ভাইপো তোলাবাজ বললে রেখে যাচ্ছেন।‘
কয়েকদিন আগে নন্দীগ্রামে বড় জনসভা করেছিলেন তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই জনসভার মঞ্চে দাঁড়িয়ে তিনি নন্দীগ্রামে প্রার্থী হওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করেন এবং সঙ্গে সঙ্গেই সেখানে প্রার্থী হবেন বলে সিদ্ধান্ত ঘোষণা করেন। যা নিয়ে চর্চা শুরু হয়ে যায় রাজনৈতিক মহলে। কয়েকদিন ব্যবধানে সেই নন্দীগ্রামে জনসভা করলেন শুভেন্দু অধিকারী। মুখ্যমন্ত্রীর জনসভা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘মাননীয়া এসেছিলেন তেখালিতে। সেটা হায়দরাবাদের দলের সভা ছিল। নন্দীগ্রামের জনগণের জনসভা হয়নি। পাঁচ বছর পরপর ভোটের সময় এলেই নন্দীগ্রামের কথা মনে পড়ে। তিনি কেন দুটো জায়গায় ভোটে দাঁড়াচ্ছেন। একটি জায়গায় অর্থাৎ নন্দীগ্রামে দাঁড়ান। আমরা চ্যালেঞ্জ নিতে প্রস্তুত। গোটা এলাকায় ভোকাট্টা করে দেব।
তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পর অধুনা বিজেপি নেতা তথা নন্দীগ্রামের ভূমিপুত্র শুভেন্দু অধিকারীর পরপর দুটি সভায় তেতে উঠেছে নন্দীগ্রাম। আগামী দিনে নন্দীগ্রাম যে আবার অন্যতম রাজনৈতিক চর্চার কেন্দ্র হতে চলেছে, তা এখনই বলা যায়।