নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: নারদাকাণ্ডে এই প্রথম গ্রেফতারী। সিবিআই গ্রেফতার করল আইপিএস এসএমএইচ মির্জাকে। নারদ স্টিং অপারেশন কাণ্ডের প্রায় সাড়ে তিন বছর পর এই প্রথম কাউকে গ্রেফতার করল সিবিআই। দীর্ঘ সময় ধরেই তাঁর ওপর নজরদারি চালানো হচ্ছিল এবং একাধিকবার তলবও করা হয় মির্জাকে। অবশেষে আজ গ্রেফতার হলেন আইপিএস মির্জা।
বৃহস্পতিবার নিজাম প্যালেসে সিবিআই দফতরে হাজিরা দিতে এলে তাঁকে গ্রেফতার করে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। আজই তাকে ব্যাঙ্কশাল আদালতে পেশ করা হবে। সূত্রের খবর, ধৃতকে আদালতে পেশ করে নিজেদের হেফাজতে চাইবে সিবিআই। তাঁকে জেরা করে এই মামলায় একাধিক প্রভাবশালী নেতার জড়িত থাকার স্বীকারোক্তি মিলতে পারে বলে মনে করছেন সিবিআই আধিকারিকরা। সিবিআই সূত্রে খবর, ইতিমধ্যেই তাঁর মেডিক্যাল পরীক্ষা শেষে আদালতে পেশ করার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।
২০১৬ সালে রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচনের ঠিক কয়েক দিন আগে প্রকাশ্যে আসে নারদা স্টিং অপারেশন কাণ্ড। ছদ্মবেশী সাংবাদিক ম্যাথু স্যামুয়েলের করা এই স্টিং অপারেশনের ফুটেজে টাকা নিতে দেখা যায় তৃণমূলের একাধিক নেতা, মন্ত্রী ও সাংসদকে। এই অপারেশনেই প্রকাশ্যে আসে এক সময় বর্ধমান জেলার পুলিশ সুপার পদে থাকা শাসকদলের ঘনিষ্ঠ আইপিএস মির্জার ভূমিকাও। তত্কালীন এক শীর্ষ তৃণমূল নেতা তথা বর্তমানে ওই বিজেপি নেতার হয়ে তাঁকে টাকা নিতে দেখা গিয়েছিল স্টিং অপারেশনের ভিডিও ফুটেজে। এরপর আদালতের নির্দেশে এই মামলার তদন্তভার হাতে নেয় সিবিআই। প্রসঙ্গত, তদন্ত শুরু করার পর নারদা স্টিং অপারেশন মামলায় এই প্রথম কাউকে গ্রেপ্তার করল সিবিআই। সূত্রের খবর, আইপিএস অফিসার মির্জার এই মামলায় যুক্ত থাকার প্রমাণ হাতে পাওয়ার পরেই তাঁকে গ্রেফতার করার প্রস্তুতি নেয় সিবিআই।
সিবিআই সূত্রে খবর, নারদা মামলার তদন্ত শুরু করার পর তাকে একাধিকবার ডেকে পাঠায় কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। সিবিআই নোটিসে সাড়া দিয়ে তদন্তকারী আধিকারিকদের সামনে মির্জা হাজিরা দিলেও জিজ্ঞাসাবাদের সময় তদন্তকারীদের বিভ্রান্ত করার অভিযোগ করেন কেন্দ্রীয় গোয়েন্দারা। কিছু দিন আগে তাঁর কণ্ঠস্বর যাচাইয়ের জন্য নিজাম প্যালেসে ডেকে পাঠায় সিবিআই। প্রায় ঘণ্টাখানেক ধরে আইপিএস অফিসার মির্জার কণ্ঠস্বর রেকর্ড করা হয়। এর পরই সিবিআইয়ের বিশেষ ল্যাবরেটরিতে মির্জার সংগ্রহ করা কণ্ঠস্বরের নমুনার সঙ্গে স্টিং অপারেশনের ফুটেজে পাওয়া তার কণ্ঠস্বর মিলিয়ে দেখেন বিশেষজ্ঞরা। বিশেষ সূত্রের খবর, দুটি কণ্ঠস্বরই হুবহু মিলে যাওয়ার পরেই তাঁকে হেফাজতে নেওয়ার প্রস্তুতি শুরু করে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। বৃহস্পতিবার নয়াদিল্লিতে সিবিআইয়ের সদর দফতর থেকে আইপিএস মির্জাকে গ্রেফতারির বিষয়ে সবুজ সঙ্কেত আসার পরেই, তাঁকে তড়িঘড়ি গ্রেফতার করে সিবিআই। আজই তাকে ব্যাঙ্কশাল আদালতে পেশ করে নিজেদের হেফাজতে নিতে চায় কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা। তাকে জেরা করে নারদা কাণ্ডে বহু প্রভাবশালীর জড়িত থাকার প্রমাণ মিলতে পারে বলে মনে করছেন তদন্তকারী আধিকারিকরা।