মহানগর ডেস্ক: ভোট এলেই নানা কারণে সংবাদ শিরোনামে উঠে আসেন তৃণমূলের বীরভূমের দাপুটে নেতা অনুব্রত মণ্ডল। কখনও বিরোধীদের ‘গুড়,বাতাসা’ খাওয়ানো কিংবা ‘চড়াম চড়াম’ ঢাক বাজানোর কথা গুলোতে প্রচ্ছন্ন হুমকি থাকে বলে বরাবর অভিযোগ করে থাকেন বিরোধীরা। এবার সেই অনুব্রত মণ্ডলের পাশে দাঁড়ালেন তৃণমূল সাংসদ। বৃহস্পতিবার একটি সাংবাদিক সম্মেলনে তাঁকে প্রশ্ন করা হয়, ভোটকর্মী ঐক্য সংগঠন নামে একটি অরাজনৈতিক সংগঠন এই নির্বাচনে অনুব্রত মণ্ডলকে যাতে গৃহবন্দি করে রাখা হয় সে বিষয়ে নির্বাচন কমিশনের কাছে দরবার করবেন। এর উত্তরে এই বর্ষীয়ান তৃণমূল নেতা তথা সাংসদ বলেন, ‘নির্বাচনের আগে ব্যাঙের ছাতার মত এইরকম হাজারো সংগঠন গড়ে ওঠে। ওই অনামী সংগঠনের কথা শুনবে কেন কমিশন? আমরাও বা শুনব কেন? অনুব্রত আমাদের দলের সম্পদ।’
এছাড়াও, ভোটের মুখে উপ নির্বাচন কমিশনার সুদীপ জৈনের অপসারণের দাবি তুলল তৃণমূল। ইতিমধ্যেই এ বিষয়ে তৃণমূলের সর্বভারতীয় মুখপাত্র তথা রাজ্যসভার সাংসদ ডেরেক ও’ব্রায়েন রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিককে একটি চিঠি করেছেন বলে বৃহস্পতিবার সাংবাদিক সম্মেলনে জানান তৃণমূল নেতা সৌগত রায়।
তিনি বলেন, “নির্বাচন কমিশন সুদীপ জৈনকে বাংলার নির্বাচন দেখভালের দায়িত্ব দিয়েছে। কিন্তু এর আগেও ২০১৯ সালে তিনি যখন বাংলার নির্বাচনের দায়িত্বে ছিলেন, ওঁর পক্ষপাতমূলক আচরণ আমাদের দৃষ্টিগোচর হয়েছে।” এ প্রসঙ্গেই সৌগত রায় বলেন, “২০১৯ সালের নির্বাচনের আগেই অমিত শাহর মিছিলের সময়ে বিদ্যাসাগর কলেজে ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের মূর্তি ভেঙে ফেলা হয়েছিল। সে সময় সুদীপ জৈন একটি ভুল ও পক্ষপাতদুষ্ট রিপোর্ট পাঠান। যার ভিত্তিতে নির্বাচন কমিশন নির্বাচনের ঠিক আগেই দু দিন প্রচার বন্ধ করে দেন।”
মূর্তি ভাঙার ঘটনায় সে দিনও নির্বাচন কমিশন কোনও পদক্ষেপ করেননি বলে অভিযোগ করেন সৌগত। অমিত শাহ কিংবা তাঁর মিছিলের বিরুদ্ধেও কোনও ব্যবস্থা করা হয়নি বলে এদিন ফের অভিযোগ করেন তৃণমূলের বর্যীয়ান নেতা। সৌগতর কথায়, “সে দিনও শ্রী জৈনের কাজ ছিল সম্পূর্ণভাবে পক্ষপাতদুষ্ট।”
প্রসঙ্গত, লোকসভা নির্বাচনের আগে বিদ্যাসাগর কলেজে মূর্তি ভাঙাকে কেন্দ্র করে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে বঙ্গ রাজনীতি। ঘটনার তদন্তে সিট গঠন করেছিল রাজ্য সরকার। বিজেপি সভাপতি অমিত শাহের রোড শো থেকেই তাণ্ডব চালানোর অভিযোগ উঠল বিদ্যাসাগর কলেজে। মহা মনীষীর মূর্তি ভাঙার নিন্দায় সরব হয়েছে বিভিন্ন মহল।
গত লোকসভা নির্বাচনে তৈরি হয়েছিল ‘কুইক রেসপন্স টিম’। সে প্রসঙ্গ তুলে সৌগত বলেন, “কুইক রেসপন্স টিমের মাথায় বসানো হয়েছিল সেন্ট্রাল ফোর্সের এক সদস্য, যা সংবিধান বিরোধী। নিয়ম হচ্ছে সিএপিএফ থাকবে, কিন্তু তাদের পরিচালনায় থাকবে একজন রাজ্যের আধিকারিক।” সৌগত প্রশ্ন তোলেন, “আমাদের খুব সন্দেহ রয়েছে সুদীপ জৈন নিরপেক্ষ থাকবেন বলে। আমাদের কোনও ভরসা নেই সুদীপ জৈনের ওপর।” রাজ্যের ৮ দফা নির্বাচনেরও প্রতিবাদ করেন সৌগত। উল্লেখ্য, এদিন তৃণমূলে যোগ দেন কীর্তন ও লোক সঙ্গীত শিল্পী অদিতি মুন্সি।