ডেস্ক: এ রাজ্যে প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ নিয়ে এবার গুরুত্বপূর্ণ রায় দিল সুপ্রিম কোর্ট৷ প্রাথমিক টেট উত্তীর্ণ যোগ্য প্রার্থীদের নিয়োগ দিতেই হবে রাজ্য সরকারকে৷ টেট সংক্রান্ত ৭টি পৃথক মামলার শুনানি একত্রে করে এমন ঐতিহাসিক রায় দিল সুপ্রিম কোর্টে ক্যুরিয়ন জোসেফ এবং এম সান্তনাগৌড়ার ডিভিশন বেঞ্চ৷ প্রাথমিক টেট নিয়ে সুপ্রিম কোর্ট আগেই তিন সদস্যের ‘ভেরিফিকেশন কমিটি’ গঠন করেছিল, এবার সেই কমিটিকে সিরিয়ে নতুন করে ‘পশ্চিমবঙ্গ লিগ্যাল এইড অথরিটি’কে ৯০ দিনের মধ্যে স্কুটিনি করার দায়িত্ব দিল ভারতের সর্বোচ্চ আদালত৷
এপ্রিলের শেষের দিকে রাজ্যের বিদ্যালয় শিক্ষা সচিব, অতিরিক্ত সচিব এবং প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের চেয়ারম্যানকে নিয়ে গঠিত তিন সদস্যের ‘ভেরিফিকেশন কমিটি’-এর রিপোর্ট সুপ্রিম কোর্টকে সন্তুষ্ট করতে পারেনি৷ এই কমিটির রিপোর্ট দেখে সুপ্রিম কোর্ট মনে করেছে, যোগ্যপ্রার্থীদের সঙ্গে কথা না বলে, নিজেদের মতো মনগড়া রিপোর্ট দিয়েছে ‘ভেরিফিকেশন কমিটি’৷ ফলে নতুন করে রিপোর্ট পেশ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল বৃহস্পতিবার৷ কিন্তু পশ্চিমবঙ্গ সরকার আরও চারসপ্তাহ সময় চাওয়ায় তা মঞ্জুর করেনি সুপ্রিম কোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ৷
মামলাকারীদের আইনজীবী শান্তিরঞ্জন দাস এবং অনিন্দ্য মুখোপাধ্যায় ডিভিশন বেঞ্চে শুনানি চলাকালীন যে সওয়াল করেন, তাতে কার্যত সিলমোহর দিয়ে ‘ভেরিফিকেশন কমিটি’ বাতিল করে দেন দুই বিচারপতি জোসেফ এবং সান্তনাগৌড়া৷ এরপর ‘পশ্চিমবঙ্গ লিগ্যাল এইড অথরিটি’কে যোগ্য প্রার্থী বাছাইয়ের জন্য স্কুটিনি করার নির্দেশ দেন৷ আর পুরোপুরি ব্যাকফুটে চলে যায় রাজ্য সরকার৷
মামলাকারী অর্থাৎ যে শিক্ষকদের যে সংগঠক এই মামলা করেছে, তাদের সদস্যদের মধ্য থেকে যোগ্য প্রার্থী বাছাই করে রাডজ্য সরকারকে জমা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট৷ এবং রাজ্যকে সেই তালিকা অনুযায়ী প্রাথমিকে নিয়োগ দিতেই হবে বলে সষ্ট নির্দেশ দেওয়া হয়েছে সর্বোচ্চ আদালতের পক্ষ থেকে৷
উল্লেখ্য, ২০০৮ সালের পর থেকে গ্রামে-গঞ্জে পাঠশালা প্রথা উঠে যাওয়ার পর তৎকালীন বামফ্রন্ট সরকার বেশকিছু পাঠশালার শিক্ষককে পুর্নবাসন হিসেবে প্রাথমিক স্কুলে চাকরি দেয়৷ কিন্তু আরও কয়েক হাজার শিক্ষক বঞ্চনার শিকার হয়েছিলেন৷ তাঁরাই চাররির দাবিতে সুপ্রিম কোর্টে মামলা করেন৷ এই সংগঠনের যোগ্য প্রার্থীদের বাছাই করে চাকরি দেওয়ার জন্য তিন সদস্যের ‘ভেরিফিকেশন কমিটি’ গঠন করে দেয় সুপ্রিম কোর্ট৷ কিন্তু আদালতের ডিভিশন বেঞ্চকে সেই কমিটির রিপোর্ট সন্তুষ্ট করতে পারেনি৷ তাই এবার ‘পশ্চিমবঙ্গ লিগ্যাল এইড অথরিটি’কে দ্রুত স্কুটিনি করে যোগ্য প্রার্থী বাছাইয়ের পর রাজ্য সরকারকে নিয়োগের সুপারিশ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে৷