ডেস্ক: কয়েক বছর আগে অবধি বঙ্গভূমে যে বিজেপির অবস্থান ছিল ‘হাঁটি হাঁটি পা পা’। হঠাৎ হাত পা ছড়িয়ে একেবারে প্রাপ্ত বয়স্ক পুরুষ হয়ে দাঁড়িয়েছে সে। আসন্ন লোকসভায় বাংলায় বুকের ছাতি ফুলিয়ে শাসক দলকে হুঙ্কার ছাড়ার জন্য বিজেপির রথযাত্রার আয়োজন প্রায় চূড়ান্ত পর্যায়ে। কিন্তু সমস্যা বেঁধেছে অন্য জায়গায়। বিজেপির এই রথযাত্রার অনুমতি দিতে নারাজ রাজ্য সরকার। এদিকে অনুমতি পেতে মরিয়া বিজেপিও হাজির হাইকোর্টে। বুধবার ছিল সেই রথযাত্রা মামলার শুনানি। তবে মীমাংসা হল না, বরং ঝুলেই রইল রথের ভবিষ্যৎ।
৭ ডিসেম্বর থেকে বিজেপির রাজ্যজুড়ে বিজেপির রথযাত্রার শুরুর দিন। এদিকে আদালতে মামলা ঝুলে থাকার ফলে বিজেপির রাজ্য নেতৃত্বের কপালে এখন প্রশ্নের ভাঁজ। এদিনের শুনানিতে অ্যাডভোকেট জেনারেলের কাছে বিচারপতি তপোব্রত চক্রবর্তী জানতে চান, রথযাত্রা সংক্রান্ত যাবতীয় সমস্যা উভয়পক্ষ একসঙ্গে বসে সমাধান করতে পারে কি না? দুপুর ২টোর মধ্যে একথা জানাতে নির্দেশ দেওয়া হয়। ২ টোর সময় যখন ফের এজি জানান এবিষয়ে সিদ্ধান্ত আগামীকাল জানানো সম্ভব। এদিকে তার একদিন পরই বিজেপির প্রস্তাবিত রথযাত্রার সূচনা ফলে উঠে আসছে নানা প্রশ্ন। আদৌ কি হবে বিজেপির রথযাত্রা? তবে আগামীকালই এবিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে জানিয়ে দিয়েছে আদালত।
তবে এদিন আদালতের তোপের মুখে পড়তে হয় অ্যাডভোকেট জেনারেলকে। আদালত প্রশ্ন করে রথযাত্রায় অনুমতি দেওয়া নিয়ে প্রথমে ডিজি তারপর আইজিকে জানানো হয়। তারপরও কেন অনুমতি দেওয়া হয়নি? রথযাত্রা নিয়ে স্বয়ং রাজ্যপালও জিজ্ঞেসা করেছেন। তারপরও মনে হয়নি অনুমতি দেওয়া যায়?’ উত্তরে এজি জানান, ‘অনুমতি দেওয়ার জন্য ওনারা যথেষ্ট নন। রাজ্যপালেরও সাংবিধানিক অধিকার নেই এ বিষয়ে হস্তক্ষেপ করার।’ এরপরই পাল্টা বিচারপতি জানান, কথায় গেলে অনুমতি পাওয়া যাবে সেটাতো জানিয়ে দিতে পারতেন প্রশাসনিক কর্তারা। সব সমস্যার সমাধান কি কোর্টে করবেন? এরপরই এজি জানান, বিজেপির এই কর্মসূচীতে কত মানুষ আসবেন, কোন কোন নেতারা আসবেন তা আমাদের জানা নেই, ফলে নিরাপত্তা দেওয়াটা আমাদের পক্ষে সমস্যার। এগুলি নিয়ে সব জেলার পুলিশ সুপারের সঙ্গে আমাদের বসতে হবে। তখন আদালতের তরফে জানানো হয়, সব সমস্যার সমাধান সম্ভব একত্রে বসে আলোচনা করলে। সেই আলোচনা শেষে আগামী কাল ফের আদালতে আসবে দুপক্ষই। আর ওই দিনই দেওয়া হবে এই মামলার চূড়ান্ত রায়। রায় যদি বিজেপির পক্ষে যায় তবে রথ যাত্রায় আর কোনও বাধা নেই। কিন্তু বিপক্ষে গেলে, বিজেপির সব আশায় পড়বে জল।