নিজস্ব প্রতিবেদক, কোচবিহার: কিছুদিন আগে নিজেই পোস্ট করেছিলেন ফেসবুকে, এত উন্নয়নের পরেই দিনহাটার মানুষ তার দলের প্রার্থীকে ভোট দেননি। সেটা হয়ত তাকে লোকেরা আর পছন্দ করছেন না বলেই। সেই পোস্ট সাড়া ফেলেছিল বাংলার রাজনীতিতে। বামপন্থী থেকে ডানপন্থী হওয়া উদয়ন গুহকে ঘিরে তাই একটা চাপা টানাপোড়েন লক্ষ্য করা যাচ্ছিল উত্তরবঙ্গের রাজনীতিতে। এবার সেই উদয়ন গুহই আক্রান্ত হলেন বিজেপির হাতে নিজের খাস তালুকে। রবিবার বেলার দিকে এই ঘটনাটি ঘটে কোচবিহার জেলার দিনহাটা মহকুমার সাহেবগঞ্জ থানার নয়ারহাট এলাকায়।
জানা গিয়েছে, এদিন সকালে দিনহাটার তৃণমূল বিধায়ক উদয়ন গুহ নযারহাট এলাকায় গিয়েছিলেন দলেরই এক কর্মী সভায় যোগদান করতে। সেই সময় বিজেপির বেশ কিছু বিজেপি কর্মী ও সমর্থকরা তার গাড়ি ঘিরে ধরে বিক্ষোভ দেখায়। সেই সঙ্গে ছোঁড়া হয় ইট। সেই ইটের ঘায়েই ভেঙে যায় বিধায়কের গাড়ির কাঁচ। যদিও তারপরেই বিধায়ক গাড়ি থেকে নেমে পায়ে হেঁটেই কর্মীসভার পথে চলে যান। সেই সময় অবশ্য আর কোন অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। খবর পেয়ে দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছায় সাহেবগঞ্জ থানার পুলিশ। তারাই বিধায়কের গাড়িটিকে ঘটনাস্থল থেকে বার করে আনেন।
প্রাথমিক ভাবে এই হামলার ঘটনার জন্য তৃণমূলের তরফে বিজেপির দিকেই অভিযোগের আঙুল তোলা হয়েছে। সেই সঙ্গে তোলা হয়েছে পুলিশ নিষ্ক্রিয় থাকার অভিযোগও। তৃণমূলের বক্তব্য, পুলিশের সামনেই ইট ছোঁড়া হয় বিধায়কের গাড়িতে। সেই সময় সেখানে জনাকয়েক পুলিশকর্মী ছিল। তারা বিক্ষোভকারীদের বাধা দেওয়ার বদলে সেখান থেকে পালিয়ে যান। যদিও স্থানীয় বিজেপি নেতারা এই হামলার দায় নিজেদের ঘাড় থেকে ঝেড়ে ফেলেছেন। তাদের দাবি্ বিজেপি নয়, বিক্ষুব্ধ তৃণমূল কর্মীরাই বিক্ষোভ দেখিয়েছে, তারাই ভাঙচুর করেছে। গোটা ঘটনার সঙ্গে বিজেপির কোন নেতা বা কর্মী জড়িত নয়। ঘটনার জেরে ওই এলাকায় বেশ চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে।
ঘটনার পরে উদয়ন গুহ বলেন, ‘আমি একটি বৈঠকে যাচ্ছিলাম। সেই সময় বিজেপির দুষ্কৃতীরা আমার গাড়িতে হামলা চালায়। আমাকে মেরে ফেলতে চাইছে ওরা। বিজেপির দুষ্কৃতীরা এলাকায় এলাকায় সন্ত্রাস শুরু করেছে।’ যদিও বিধায়কের ওই অভিযোগ মানতে চাননি বিজেপির জেলা সহ সভাপতি ব্রজ গোবিন্দ বর্মণ। তিনি বলেন, ‘ওই ঘটনার সঙ্গে বিজেপির কোন সম্পর্ক নেই। তিনি ওই এলাকাগুলি থেকে অনেক কাটমানি খেয়েছেন। এলাকার লোক তাকে কাছে পেয়ে তাদের ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ করছেন। এটা মানুষের জনরোষ।’