মহানগর ওয়েবডেস্ক: উত্তর কলকাতার বাদুর বাগানের বাড়িতে জীবনের শেষ কয়েকটা বছর কাটিয়েছিলেন ঈশ্বর চন্দ্র বিদ্যাসাগর৷ এখানে ১৮৯১ সালে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন৷ এবার মমতা প্রশাসন বাড়িটিকে বিদ্যাসাগরের জাদুঘর করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে৷ ২৭ সেপ্টেম্বর বিদ্যাসাগরের ২০০তম জন্মদিনের দিন এমনটাই জানালেন বাংলার শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়৷
বাদুড়বাগানের বাড়িতে জীবনের শেষ পর্ব কেটেছিল বিদ্যাসাগরের। সেখানেই জাদুঘর তৈরি করে সাজানো হবে ছবি ও মডেল দিয়ে। পশ্চিম মেদিনীপুরের বীরসিংহ গ্রামে জন্ম থেকে শুরু করে তাঁর গোটা জীবনই কালক্রমে তৈরি করে সাজানো থাকবে এই জাদুঘরে। পার্থ চট্টোপাধ্যায় বৃহস্পতিবার বিদ্যাসাগর অ্যাকাডেমির উদ্বোধন করেন। ওইদিন ছিল বাংলার তথা ভারতের মহান এই সমাজ সংস্কারকের জন্মবার্ষিকী। ওই অনুষ্ঠানে দু’টি বইয়েরও উদ্বোধন করেন শিক্ষামন্ত্রী। বই দু’টির নাম হল ‘আমাদের বিদ্যাসাগর’ ও ‘ছোটদের বিদ্যাসাগর’।
জাদুঘর নির্মিত হলে ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর ব্যবহৃত কিছু জিনিসও রাখা থাকবে বলে জানা গিয়েছে। শিক্ষামন্ত্রী বলেন, এর ফলে বর্তমান প্রজন্মের পক্ষে সেই কিংবদন্তি মানুষটিকে বোঝা সম্ভব হবে, যিনি নারীর অবদমন রোধ ও বিধবা বিবাহের প্রচলনের মাধ্যমে প্রাতঃস্মরণীয় হয়ে রয়েছেন।সেই সঙ্গে তিনি জানান, ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের জীবন ও কাজ নিয়ে আগামী একবছর ধরে স্কুল-কলেজে বিভিন্ন সেমিনার হবে।এছাড়াও ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের অপ্রকাশিত রচনাও প্রকাশিত হতে চলেছে।মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সম্প্রতি ঘোষণা করেছেন, ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের জন্মস্থান বীরসিংহ গ্রামে তৈরি হবে শিক্ষামূলক ট্যুরিস্ট হাব।
বৃহস্পতিবার বিদ্যাসাগর কলেজে উদ্বোধন হল বিদ্যাসাগরের একটি ব্রোঞ্জ মূর্তি। শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘‘যাঁরা বিদ্যাসাগরের সামাজিক সংস্কারের বিরুদ্ধে, তারাই তাঁর নামাঙ্কিত কলেজে তাঁর মূর্তি ভাঙার গুন্ডামি করে। ‘উল্লেখ্য গত মে মাসে বিজেপি সভাপতি অমিত শাহ কলকাতায় এলে সেই সময় একদল দুষ্কৃতী ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের মূর্তি ভেঙে দেয়।ঊনবিংশ শতকে নারীর শোষনের বিরুদ্ধে বিদ্যাসাগরের সোচ্চার ভূমিকা চিরস্মরণীয়। বিধবা বিবাহের প্রচলন করে সেযুগে বহু মানুষের বিরাগভাজন হতে হয়েছিল তাঁকে। তবু পিছপা না হয়ে নিজের কাজে ব্রতী থেকেছেন তিনি। ‘বর্ণপরিচয়’-এর মতো বই লিখে বাঙালি শিশুকে ‘আ মরি বাংলা ভাষা’র সঙ্গে পরিচয় করানো তাঁর জীবনের আর এক কীর্তি।বাঙালির নবজাগরণের অন্যতম পথিকৃতকে স্মরণ করে রাজ্য জুড়ে চলছে ‘বিদ্যাসাগর সপ্তাহ’।